ঢাকাThursday , 14 May 2020
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরের পল্লীতে বিলুপ্ত প্রায় বাবুই পাখির বাসা বুননে ব্যস্ত সময় পার

Tito
May 14, 2020 8:53 pm
Link Copied!

মোঃ শাহ্ জালাল।।
‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই/ কুঁঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই/ আমি থাকি মহা সুখে অট্টালিকা পরে/ তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে।’….মানুষকে মানবিকভাবে জাগ্রত করার জন্য কবি রজনীকান্ত সেন এ কবিতাটি রচনা করেন। তার এ কালজয়ী কবিতাটি এখনো মানুষের মুখে মুখে। বাবুই পাখিকে নিয়ে কবির ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতাটি আজও মানুষ উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করলেও হারিয়ে যেতে বসেছে বাবুই পাখি ও বাবুই পাখির বাসা। বাবুই পাখির বাসা আজ অনেকটা স্মৃতির অন্তরালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অথচ আজ থেকে প্রায় ১৫/২০ বছর আগেও গ্রাম-গঞ্জে তাল, নারকেল ও সুপারি গাছে দেখা যেত বাবুই পাখির নিপুণ কারুকাযের্ তৈরি দৃষ্টিনন্দন বাসা।
বাবুই পাখি সাধারণত তাল, খেজুর, নারকেল ও আখ ক্ষেতে বাসা বাঁধে। এসব বাসা শুধু শৈল্পিক নিদশর্নই না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগায় এবং স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করে। কিন্তু সময়ের বিবতের্ন ও পরিবেশ বিপযের্য়র কারণে আজ এ পাখিটি আমরা হারাতে বসেছি। গাছের ঝুড়ির মতো চমৎকার বাসা বুনে বাস করায় এ পাখির পরিচিতি জগৎজোড়া। খড়, তাল গাছের কচি পাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতা-পাতা দিয়ে উঁচু তালগাছে চমৎকার বাসা তৈরি করে বাবুই পাখি। সেই বাসা যেমন আকষর্ণীয় তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা ভেঙ্গে পড়ে না। বাবুই পাখির শক্ত বুননে এ বাসা টেনেও ছেঁড়া যায় না। এ জন্য অনেকেই একে তাঁতি পাখি বলে ডেকে থাকেন। ধান, চাল, গম ও পোকা-মাকড় প্রভৃতি তাদের প্রধান খাবার।
যশোর মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এখন আর আগের মতো বাবুই পাখির নিপুণ কারুকাযের্ তৈরি দৃষ্টিনন্দন বাসা চোখে পড়ে না বললেই চলে। একসময় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের তাল, নারিকেল গাছে দেখা যেত বাবুই পাখির বাসা। বতর্মানে তালগাছসহ বিভিন্ন গাছ নিবির্চারে নিধন করা হচ্ছে। আর সেকারণে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি ও তার শৈল্পিক বাসা। এছাড়া একশ্রেণির লোভী মানুষ অথের্র লোভে বাবুই পাখির বাসা সংগ্রহ করে ধনীদের কাছে বিক্রয় করছে। এই বাবুই পাখির বাসা শোভা পাচ্ছে ধনীদের ড্রইং রুমে। বাবুই পাখির এ শৈল্পিক নিদশর্নকে টিকিয়ে রাখার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার বলে জানিয়েছেন পাখিপ্রেমী সচেতনমহল।
মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মাঠে একটি তাল গাছে দেখা মিললো কাক্সিক্ষত বাবুই পাখির বাসা। বাতাসে দোল খাচ্ছে বাবুই পাখির শৈল্পিক বাসা। আমাদের ম্যামকুড় ইউনিয়ান প্রতিনিধি মোঃ মেহেদী হাসান জানান কিছুদিন আগেও এই গাছটিতে দশটি বাবুই পাখির বাসা ছিলো। গতো কয়েদিন আগে বৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে ৯টি পাখির বাসা নষ্ট হয়ে যায়। এখন আবারো শিল্পির মতো করে নতুনভাবে বাসা তৈরীতে ব্যাস্ত বাবুই পাখিগুলো। একসময়, এই মাঠের গাছগুলোতে প্রচুর বাবুই পাখির বাসা দেখা যেত। গাছের সংখ্যা কমে যাওয়াতে এখন আর তেমন দেখা যায় না।
তিনি আরো বলেন প্রতি বছর চৈত্র-বৈশাখ মাসে আমাদের গ্রামে মাঠের তালগাছে বাবুই পাখি এসে বাসা তৈরি করে। মাঝেমধ্যে এ গ্রামে অনেকে বেড়াতে এসে তাকিয়ে থাকেন বাবুই পাখির বাসা ও বাবুই পাখির দিকে। মোবাইল ক্যামেরা বা বড় ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলেন, ভিডিও করেন। আমরা নিজেরাও চেষ্টা করি এখানকার এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।