মণিরামপুরে কৃষকলীগ নেতা শফি কামাল ও যুবলীগ নেতা শাহীন হত্যা মামলার অন্যতম আসামী দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মওদুদ আহমেদ (২৫) অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ম্যাজিট্রেটের নিকট স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্ধী প্রদান করেছে। মঙ্গলবার রাতে তাকে থানার এসআই মাসুম বিল্লাহ কেশবপুর থানা এলাকা থেকে আটক করেন।
জানাযায়, হালসা গ্রামের সদর রাজাকারের পুত্র মওদুদ আহমেদ একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। সে একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। বিগত ২০১৩ সালের হরতাল, অবরোধ ও নির্বাচনের সময় স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা কর্মীকে প্রকাশ্য কুপিয়ে ও হাত-পা ভেঙ্গে দিয়ে এবং আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়ে ভাংচুর করে নিজেকে এলাকায় একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে আত্ম প্রকাশ করে। ফলে এলাকার সর্বশ্রেণীর মানুষ অল্প বয়সী এই সন্ত্রাসীর ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়ে।ঁেখাজ নিয়ে জানাগেছে, সন্ত্রাসী মওদুদ এর নেতৃত্বে যুবলীগ নেতা শাহীনকে দুইবার কুপিয়ে ও হাত-পা ভেঙ্গে দিয়ে হত্যার চেষ্টা চলে এবং সর্বশেষ ২০ জানুয়ারী দুপুর আড়াইটায় কাশিপুর মাদ্রাসার সামনে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর আগে ২৬ ডিসেম্বর দুপুরে চাঁদপুর-গরীবপুর মাদ্রাসার সামনে নৌকার পোষ্টার লাগানোর সময় কৃষকলীগ জেলা কমিটির সহ সভাপতি ও উপজেলা কমিটির সভাপতি শফি কামালকে প্রকাশ্য কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ওই নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে তার সরাসরি সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে জানাগেছে। এছাড়াও ঘুঘুরাইল গ্রামের যুবলীগ নেতা সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক মিকাইল হোসেনের ভাগ্নে ইউনুচ আলীকে দুইবার কুপিয়ে জখম করে ও হাত-পা ভেঙ্গে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। মরনাপন্ন ইউনুস উন্নত চিকিৎসা নিয়ে বেচে থাকলেও সে এখনও প্রায় পঙ্গু অবস্থায় জীবন যাপন করছে। তার বাড়ি ঘর ভাংচুর করে মওদুদ এর নেতৃত্ব আগুন দেয়া হয়। লাউড়ী গ্রামের যুবলীগ নেতা দিপক ঘোষকেও হত্যার চেষ্টা করে তার বাড়িতে বোমা মেরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাড়দিয়া, কাশিপুর, লাউড়িসহ কয়েকটি ভোট কেন্দ্র ভাংচুর করে বোমা মেরে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি যুবলীগ নেতা শাহীন হত্যাকান্ডের পর সে আত্মগোপনে চলে যায়।
থানা সুত্রে জানাগেছে, মঙ্গলবার রাতে আটক বহু অপকর্মের হোতা মওদুদকে কেশবপুর এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আটক করা হয়। তাকে বুধবার দুপুরে শাহীন হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠালে সে স্বেচ্ছায় জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট মারুফ আহম্মেদের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধী দেয়। এই জবানবন্ধীতে সে নিজেকে হত্যা ঘটনায় সম্পৃক্ত করে অন্যান্য জড়িতদের নাম প্রকাশ করেছে বলে জানাগেছে। তদন্তের স্বার্থে ও আসামীদের আটক করার সুবিধার্থে তাদের নাম তদন্তকারী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের নিকট প্রকাশ করেননি। থানার অন্যান্য সুত্রে জানাগেছে আটককৃত মওদুদের বিরুদ্ধে ২ টি হত্যা ও ৫ টি বোমাবাজি মামলা রয়েছে। যার মামলা নং ১৮( ৩)১৩, ১৪(২)১৩, ১৭(৮)১৩, ৩৭(১২)১৩, ২৭(১)১৪, ৭৮(১)১৪, ২১(১)১৫ । এর মধ্যে ৪ টি মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসীট দাখিল হয়েছে।