ঢাকাশনিবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে ২০ যুবকের মধ্যে ১৫ জনের হদিস মিলছে না বিদেশে পাড়ি জমানো নিখোঁজের সারি দিন দিন বৃদ্ধি

admin
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫ ২:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মণিরামপুর থেকে দালাল চক্রের প্রলোভনে পড়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানো ২০ যুবকের মধ্যে ১৫ জনের হদিস মিলছে না । ইতো মধ্যে ৫ যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৩ জনের লাশ দেশে ফিরলেও অপর ২ জনের লাশ কোথায় পড়ে আছে তা পরিবারের সদস্যরা জানেনা। জানাযায়, গত কয়েক মাসে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে জাহিদুল, আনিচুর, জমির, সুমন, আসানুর, হাসান, ফারুক, শাহা আলম, শরাফত, মাসুদ, রসুল, ইকবাল, শিমুল, আল আমিন, সাঈদ, আতিয়ার, রুবেল, রোস্তম, সেলিম ও রবিউল নিখোঁজ হয়। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দালাল চক্রের মাধ্যমে পানি পথে মালায়েশিয়ায় গেছে এতোটুকু নিশ্চিত হয়েছে তাদের পরিবার।Monirampur- Picture এদের মধ্যে রুবেল, রোস্তম ও রবিউল ইতোমধ্যে কক্সবাজার ট্রাজেটিতে মারাগেছে। পানি পথে তাদেরকে মালায়েশিয়ায় নেওয়ার চেষ্টা করলে নৌযানে গুলি বিদ্ধ হয়ে তারা মারা যায়। তাদের লাশ বাড়িতে ফিরেছে। আবু সাঈদ ও আতিয়ার রহমান মারাগেছে এরুপ ভাবে নিশ্চিত হয়েছে তাদের পরিবার। কিন্তু তাদের লাশ কোথায় কিভাবে আছে তার উত্তর পরিবারের সদস্যদের কাছে নাই। এ সকল পরিবার গুলিতে শোকের মাতন আছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, আবু সাঈদের স্ত্রী পারভিনা খাতুন তার দু’সন্তানকে দীর্ঘ এক বছর ধরে মিথ্যা সান্তনা দিয়েই চলেছে। সন্তানরা বাবা আবু সাইদকে যখনই খোজ করতে থাকে মা পারভিনা সন্তানদের সান্তনা হিসেবে জানায় আব্বু বিদেশ গেছে তোমাদের জামা কাপড় আনবে। কিন্তু সন্তানরা আজও জানতে পারেনি তাদের বাবা আর ফিরবে না। মণিরামপুরে মামুদকাটি গ্রামের মতিন বিশ্বাসের ছেলে আবু সাইদ। স্ত্রী পারভিনা, মেয়ে তন্নী ও পুত্র হাবিবুরকে রেখে মালায়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় গত বছর। প্রতিবেশী বাবুল নামের এক দালাল পানি পথে নিয়ে যাওয়ার সময় গত বছরের ১৭ এপ্রিল সাগর পানিতে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু লাশটাও পায়নি তার পরিবার। কেবল সাইদ নয়, বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে এভাবে নিখোজের সারি ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধ শতাধিক যুবকরে সন্ধান পাচ্ছে না তাদের পরিবার। অধিকাংশ গ্রামেই সন্তান হারা মায়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দালালের খপ্পরে পড়ে কক্সবাজারের উখিয়ার সাগরে গুলিতে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে এনায়েতপুর গ্রামের যুবক রুবেল, সেলিম, রবিউল। গত বছরের ২১ জুন ট্রলারে যাওয়ার সময় বন্ধুকধারীদের গুলিতে তাদের মৃত্যু হয়। এসব এ ঘটানা ঘটে চললেও থেমে থাকছে না অবৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার আকাঙ্খা। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর খেদাপাড়া গ্রামের গফুর সরদারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম, প্রতিবেশী আজগার আলীর ছেলে আনিচুর রহমান নিখোজ হয়েছে। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দালাল চক্রের মাধ্যমে পানি পথে মালায়েশিয়ার পথে গেছে এতোটুকু নিশ্চিত হয়েছে তাদের পরিবার। কিন্তু দু’মাস গত হলেও তাদের সাথে কোন যোগাযোগ না থাকায় পরিবার দু’টিতে চলছে কান্নার রোল। বিষয়টি নিয়ে সন্তান হারা দুই বাবা মণিরামপুর থানায় অভিযোগ করেছে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে। ভরতপুর গ্রামের যুবক জমির, আসানুর , ফারুক হোসেন, শাহা আলম, শারাফত আলী ও মাসুদ নিখোজ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এসব পরিবারগুলো খোজ খবর করেও তাদের সন্তানদের কোন সন্ধান পায়নি। নোয়ালি গ্রামের হাসান আলী , চাকলা অঞ্চলের রসুল, ইকবাল, শিমুল, আল আমিনের খোজ আজও পায়নি তার পরিবার। ক্রমাগতভাবে দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে অভাবী পরিবারের যুবকরা এভাবে ভেসে যাচ্ছে সাগর জ্বলে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এর কোন প্রতিকার পায়নি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলো। নির্ভরযোগ্য একাধিক সুত্র জানিয়েছে -খেদাপাড়া গ্রামের জসিম, বেলতলা গ্রামের শফিকুল ইসলাম, ডুমুরখালীর বাবলুসহ প্রায় ২০/২৫ জনের একটি দালাল চক্র বাধাহীনভাবে এভাবে মানব পাচার করে চলেছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের দাবি বাড়ি থেকে তাদের ফুসলিয়ে নিয়ে জিম্মি করা হয়। এর পর লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় দালাল চক্র। তারপর ভাগ্যর নির্মম পরিহাসের শিকার হয় তারা। আর এভাবেই কেউ নিখোজ বা কেউ লাশ হয়ে বাড়ি ফেরে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।