ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লেপ-কাঁথা মুড়ি দিয়ে খাটের নিচে আশ্রয় মণিরামপুরে আচমকা শিলা বৃষ্টি ॥ ৫ শতাধিক বসতবাড়ি, রবি শস্যের ক্ষতিসাধন প্রায় ৫ কোটি

admin
ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৫ ২:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মণিরামপুরে বুধবার রাতের আচম্কা শিলা বৃষ্টিতে শত শত টালি-টিনের বসতবাড়ি, কয়েক’শ হেক্টর জমির রবি-শস্যসহ আমের মুকুল ও ই্টভাটার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলা বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে আতংকিত লোকজন লেপ-কাঁথা মুড়ি দিয়ে খাটের নিচে আশ্রয় নেয়। শিলায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ১ জন আহত হন। উপজেলা প্রশাসন প্রাথমিক ভাবে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি টাকা নিরুপণ করেছেন। তবে, স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থদের মতে এ ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে পরদিন সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সংশিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাসমূহ পরিদর্শন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, বুধবার রাত ৮টার পরে আকাশে মেঘ দেখা দিলে বৃষ্টি নামার আগেই বড় বড় শিলা পড়তে শুরু করে। একটানা আধা ঘন্টা ব্যাপী শিলা পড়ে। এর পর ঘন্টা ব্যাপী শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। ভোর রাতে শুরু হয় ঝড়ো-বৃষ্টি। এর ফলে উপজেলার চালুয়াহাটী ইউনিয়নের গৌরীপুর, সিংহের খাজুরা, হায়াতপুর, গোপীকান্তপুর, পানিছত্র, রতনদিয়া, আটঘরা19-02-1015, রামনাথপুর, রতেœস্বরপুর, লক্ষণপুর, মোবারকপুর, ঝাঁপা ইউনিয়নের ঝাঁপা গ্রাম, মনোহরপুর, হানুয়ার, রাজগঞ্জ, চন্ডিপুর, খালিয়া, শ্যামকুড় ইউনিয়নের শ্যামকুড়, হাসাডাঙ্গা সহ উপজেলা প্রায় অর্ধ-শতাধিক গ্রামের প্রায় ৫’শ টালি ও টিনের ছাউনি ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ সময় ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন আতংকিত হয়ে পড়ে। শিলার হাত থেকে রক্ষা পেতে লোকজন লেপ-কাঁথা মুড়ি দিয়ে খাটের নিচে আশ্রয় নেয়। এছাড়া ক্ষেতের গম, মসুরি, আলু, পেয়াজ, রসুন, আমের মুকুল কলা গাছের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মোবারাকপুর গ্রামের জহিরের স্ত্রী শিল্পী খাতুনের মাথায় শিলা পড়ে আহত হয়। চালুয়াহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলুর রহমান ও ঝাঁপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন জানান, ইউনিয়নবাসীর যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা স্ব-চোখে না দেখলে অনুভব করা যাবে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার জানান, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার প্রায় ১’শ ২২ হেক্টর জমির গম, ৫৭ হেক্টর জমির আলু, ৫২ হেক্টর জমির সবজি, ২২ হেক্টর জমির আমের মুকুল সহ প্রায় ৩’শ ২৪ হেক্টর জমির বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যার আর্থিক পরিমান প্রায় ৩ কোটি টাকা বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, শিলা বৃষ্টির কারণে প্রায় অর্ধ-শতাধিক গ্রামের ৫’শ টালি ও টিনের ছাউনি ঘর-বাড়ি আংশিক থেকে সম্পূর্ন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ টাকা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ নজরুল ইসলাম জানান, শিলা বৃষ্টির কারণে ইট ভাটার প্রায় দেড় কোটির টাকা ক্ষতি সাধনসহ শিলা বৃষ্টিতে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রতেœশ্বরপুর গ্রামের মোশারফ ও মফিজুর রহমানের টালি ঘর ও বিলালের ১৫০শত মুরগী মারা যায়। রতনদিয়া গ্রামের শাহাদাৎ গাজী, রাজ্জাক ও লিটনের টিনের ঘর, রাজগঞ্জ বাজারের আড়ৎ ব্যবসায়ী রাশেদের, জলিলের টিনের ঘর, আফজাল মাষ্টারের রাইচ মিলের টিনের ঘর, হানুয়ার গ্রামের ওসমান গণিনটিনের ঘরের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। চালুয়াহাটী ইউনিয়নের লক্ষনপুর গ্রামের গোলাম বিশ্বাসের প্রায় ৩ বিঘা ক্ষেতের মসুরি, রতনদিয়া গ্রামের ইকবাল হোসেনের প্রায় ৪ বিঘা জমির গম, সিংহের খাজুরা গ্রামের হাফিজুরের প্রায় ২ বিঘা কলার ক্ষেত জমশেদ আলীর প্রায় ৫ বিঘা আলুর ক্ষেত সম্পূর্ণ মাটির সাথে মিশে গিয়েছে। শ্যামকুড় ইউনিয়নের জমজমিয়া দাখিল মাদ্রাসার টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্য, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ নজরুল ইসলাম, কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাসমূহ পরিদর্শন করেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।