ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে পিতার বিরুদ্ধে মামলা করল মেয়ে

admin
সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৫ ২:৩৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ন্যায্য অধিকারের দাবিতে মণিরামপুরে পিতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে অসহায় মেয়ে। বুধবার রাতে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে এই মামলাটি করা হয়। তবে তাতক্ষণিকভাবে মামলাটি গ্রহণ না করে অন্য প্রক্রিয়ায় পিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে থানার ওসি তাহেরুল ইসলাম জানিয়েছেন। এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নেহালপুর এলাকার মোস্তফা গাজী প্রায় ২০ থেকে ২২ বছর পূর্বে তার প্রথম স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে দেয়। তখন তার রিক্তা নামের ১৪ মাসের একটি কন্যা সন্তান ছিল। শিশু কন্যাটির মুখের দিকে তাকিয়ে স্থানীয়রা তখন মোস্তফাকে পুলিশে না দিয়ে রক্ষা করে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ এলাকাবাসী সালিশ করে রিক্তার ভবিষ্যতের জন্য ওই মেয়ের নামে মোস্তফা দশ কাঠা জমি লিখে দেবে ও একটি রেন্টি গাছ মেয়ের বিবাহের সময় খরচ করতে হবে বলে গাছটি নির্ধারণ করে রেখে দেয়। এরইমধ্যে মোস্তফা দ্বিতীয় বিয়ে করে জৈনক নূর জাহানকে ঘরে তোলে। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই রিক্তার পরে বাবা ও মায়ের অত্যাচার শুরু হয়। ধীরে ধীরে রিক্তা বেড়ে ওঠে। এরই মধ্যে যশোরে এক ছেলের সাথে রিক্তার বিয়ে দেয় তার বাবা মোস্তফা। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস সেখানে সংসার করা হল না রিক্তার। মায়ের ঘরের বোন রহিমা রিক্তার তখনকার স্বামীর সাথে বেরিয়ে গেলে রিক্তার সংসার ভাঙ্গে। সেখানে রিক্তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার সময় তারা কাবিন ও খোরপোষ বাবদ ৬০ হাজার টাকা দেয়। তারপর রিক্তাকে বাড়িতে এনে পুনরায় বিয়ে না দিয়ে মাঠে কামলা খাটানো সহ শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে পাষন্ড পিতা মোস্তফা ও মা নূর জাহান। রিক্তার উপর নির্যাতন দেখে তা সইতে না পেরে স্থানীয়রা পাশের বালিধা গ্রামের মুখ প্রতিবন্ধী আতাউরের সাথে তার বিবাহ দেন। এরই মধ্যে রিক্তার পূর্বের স্বামীর সাথে বিয়ে হওয়া তার বোন রহিমার সংসার ভাঙ্গলে সেও এসে বাবার বাড়িতে ওঠে। পরে স্থানীয় সেলিম ওরুফে নিউটনের সাথে রহিমাকে বিয়ে দিয়ে বাড়িতে রাখে মোস্তফা। এদিকে স্বামী আতাউরকে সাথে নিয়ে রিক্তা মাঝে মাঝে পিতার বাড়িতে আসলে তার পিতা,সৎ মা,সৎ বোন ও বোনের স্বামী নিউটন তাকে মারাধরা করে ও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। নির্যাতন সইতে সইতে কঠিন হয়ে ওঠে রিক্তার মন। সম্প্রতি সে পিতার কাছ থেকে প্রাপ্য ১০ কাঠা জমি,৬০ হাজার টাকা ও সেই রেন্টি গাছ দাবী করে। রিক্তার দাবীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করে স্থানীয়রা মোস্তফাকে চাপ দেয়। তখন গত মাসের ২৭ তারিখ চক্রান্ত করে মোস্তফা আপন ভাই আ.কাদের, আ.কাদেরের দুই ছেলে,নেহালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমানসহ ৬ জনকে আসামী করে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এরইমধ্যে স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশে রিক্তা অভিযোগ করে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার বিকেলে নেহালপুর ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই রাকিবুল স্থানীয়দের সাথে নিয়ে সালিশে বসে। এসময় ওই রেন্টি গাছ বিক্রি করে মোস্তফা ৩৫ হাজার টাকা মেয়ে রিক্তাকে দিয়ে দিলে রিক্তার আর কোন দাবী থাকবে না বলে সালিশে সিদ্ধান্ত হয়। মোস্তফাও সালিশ মেনে বাড়ি চলে আসে। বাড়ি আসলে মত পাল্টায় মোস্তফার। এদিকে রিক্তা বুধবার দুপুরে পিতার বাড়িতে আসলে মোস্তফা,তার স্ত্রী নূর জাহান,মেয়ে রহিমা ও জামাই নিউটন তাকে মারধর করে। এঘটনাসহ পূর্বের সকল দাবী আদায়ের লক্ষে স্থানীয় শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে রিক্তা পিতা মোস্তফাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। রিক্তা জানায়,পিতার কাছে প্রাপ্য টাকা চাইলে সে আমাকে মায়ের মত করে হত্যা করার হুমকি দেয়। নেহালপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই রাকিবুল জানান,রিক্তার অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখেছি। রিক্তার বাবা মোস্তফা আসলে একজন খাবার মানুষ। গত মঙ্গলবার স্থানীয়দের নিয়ে সালিশে বসে বিষয়টি মিমাংশার চেষ্টা করেছি। মোস্তফা তখন সালিশের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও পরে তা উল্টে দিয়েছে। এদিকে থানায় মামলা হওয়ার কথা শুনে ভয়ে মোস্তফা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছেন এসআই রাকিবুল। থানার ওসি তাহেরুল ইসলাম জানান,মামলাতো নিবই,তবে অন্যভাবে রিক্তাকে তার প্রাপ্য বুঝে দেওয়া যায় কিনা তা চেষ্টা করে দেখা হচ্ছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।