নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় অবশেষে শ্রীঘরে গেলেন আজিজুর রহমান। সে কেশবপুর ডিগ্রী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক। মঙ্গলবার রাতে তাকে বাড়ি থেকে আটকের পর জেল হাজতে প্রেরণ করেছে মণিরামপুর থানা পুলিশ। মামলার বিবরণে জানাযায়, মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের নেংগুড়াহাট সিংহের খাজুরা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে নাজমুন্নাহারের সাথে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি কেশবপুর উপজেলার চাঁদড়া গ্রামের রাশেদুল আলমের ছেলে আজিজুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের এক মাস যেতে না যেতেই আজিজুর রহমান কলেজে চাকরির কথা বলে শ্বশুরের কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন বলে অভিযোগ। কিন্তু শ্বশুর বাড়ির লোকজন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নাজমুন্নাহারের উপর নির্যাতন করা শুরু করে আজিজুর। নির্যাতনের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে আজিজুর ও তার পরিবারের লোকজন নাজমুন্নাহারকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে ঘরের মধ্যে তালা বদ্ধ রাখত। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে কয়েক দফায় অর্থলোভী আজিজুর রহমানকে ৮ লাখ টাকা দেয় শ্বশুর আব্দুর রাজ্জাক। তিনি এতে ও ক্ষান্ত হননি । আরো ২ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তিনি স্ত্রীর উপর নির্যাতন অব্যাহত রাখেন। একপর্যায় স্বামী, দেবর ও শ্বশুরের নির্মম নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ১৮ জুন নাজমুন্নাহার বাবার বাড়িতে চলে যান। এরপর একমাত্র মেয়ের কথা চিন্তা করে গত ১৭ আগস্ট জামাই আজিজুর ও তার পরিবারের সদস্যদের নিজ বাড়িতে সমঝোতার জন্য ডাকেন নাজমুন্নাহের অসহায় পিতা আব্দুর রাজ্জাক। সমঝোতার একপর্যায় পুনরায় ২ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় আজিজুর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুর, শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজনের সামনে স্ত্রীকে মারপিট করে চলে যান। এরপর মেয়ের পরিবার অনেকটা কৌশলে জানতে পারে যে, আজিজুর তাদের মেয়েকে বিয়ের করার আগেও খুলনার দৌলতপুর বি.এল কলেজ রোডে আরো একটি বিয়ে করেছিল এবং বর্তমানে সেখানেও তার ওঠা বসা রয়েছে। যে কারণে কোন উপায় না পেয়ে নাজমুন্নাহারের মা ছায়রা বেগম বাদি হয়ে গত সেপ্টেম্বর ৪ জনকে আসামি করে মণিরামপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এ মামলার ভিত্তিতে মণিরামপুর ও কেশবপুর থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর রাতে শিক্ষক আজিজুর রহমানকে তার বাড়ি আটকের পর জেলহাজতে প্রেরণ করে।