যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চাকলা গ্রামের একটি খালের মুখ মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় দু’টি মৌজার প্রায় ৭শ’একর জমিতে চলতি মৌসুমে ইরি-বোরোর আবাদ হচ্ছে না। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যার কারণে ওই ৭শ’ একর আবাদী জমির মধ্যে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। শীত মৌসুম আসলেই ওই পানি রাধানগর খাল দিয়ে কপোতাক্ষ নদীতে পড়ে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি জোরপূর্বক ওই খালের মূখ মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় পানি নিষ্কাশনের অভাবে চলতি ইরি বোরো আবাদ করা নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন কপোতাক্ষ পাড়ের ২০হাজার কৃষক পরিবার। এব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ১৮ নভেম্বর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বুধবার সরজমিনে যেয়ে দেখা যায়, বন্যাকবলিত মশ্মিমনগর ইউনিয়নের ১৭৯ নম্বর চাকলা ও ১৭৮ নম্বর কিসমত চাকলা মৌজার প্রায় ৭শ’ একর আবাদি জমি জলাবদ্ধতা অবস্থায় রয়েছে। ওই সকল জমির পানির নিষ্কাশনের একমাত্র পথ হচ্ছে রাধানগর সরকারি খাল। ওই খাল দিয়ে জমে থাকা এসব জমির পানি সরাসরি কপোতাক্ষ নদীতে যেয়ে পড়ে। পানি সরে যাওয়ার পরপরই স্থানীয় কৃষকদের ব্যস্ততাও বেশ বেড়ে যায়। তারা ধান রোপনের জন্য জমিটি প্রস্তুত করার পাশাপাশি ধানের বীজ বপনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু দু’টি মৌজার প্রায় ২হাজার কৃষকের সে স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়েছে। ওই গ্রামের কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি জোরপূর্বক রাধানগর খালের মুখ মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দু’টি মৌজার কয়েক হাজার চাষী। এব্যাপারে ভুক্তভোগী শতশত পরিবার গত ১৮ নভেম্বর স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এব্যাপারে কথা হয় চাকলা গ্রামের চাষী সাইফুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, জলাবদ্ধতার কারণে বছরে আমরা একটি করে ফসল পাই। কিন্তু এবার চাকলা গ্রামের আমিনুল ইসলাম পিয়াস, সিরাজুল ইসলাম ও আফজাল খার নেতৃত্বে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক জমি লিজ নেয়ার অজুহাত দেখিয়ে রাধানগর সরকারি খালের মুখ মাটি দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারণে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে বৃহত্তর এ মাঠে এবার আবাদ হচ্ছেনা। সমাজসেবক নজরুল গাজী জানান, সরকারি খালের মুখ জোরপূর্বক বেধে দেয়ায় দুটি মৌজায় বেশ কয়েকটি ব্লকে এবার ইরি-বোরোর আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ওই দু’টি মৌজার প্রায় ৭শ’ একর জমিতে সেচের কোন ব্যবস্থা না থাকায় ইরি-বোরোর আবাদ করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার কৃষক। ফলে জরুরী ভিত্তিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যদি দ্রুত পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না করেন তাহলে বন্যাকবলিত এ এলাকার ২০হাজার কৃষক পরিবার ইরি-বোরো আবাদ করতে না পেরে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। সেই সাথে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম খাদ্য সংকটে পড়তে পারেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।