ঢাকাসোমবার , ২৫ জানুয়ারি ২০১৬
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সরকার কৃষকের জন্য ভুর্তকি দিলেও সে টাকা যাচ্ছে সেচ পাম্প মালিকের পকেটে!

admin
জানুয়ারি ২৫, ২০১৬ ১:০৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বছরে কৃষিখাতে সরকার কোটি কোটি টাকা ভুর্তকি দিচ্ছে। এর মধ্যে শুধু মটরচালিত সেচ পাম্পে ভুর্তকি দেয়া হচ্ছে সিংহভাগ টাকা। যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় বছরে সেচ পাম্পে প্রায় কোটি টাকা ভুর্তকি দেয়া হলেও সুবিধার পুরোটাই ভোগ করছে মালিকপ বলে অভিযোগ। যার ছিটেফোটাও পাচ্ছে না বলে দাবি প্রান্তিক কৃষকদের। অবাক ব্যাপার হলো অনেক কৃষক জানেই না তারা ভুর্তকির টাকা পেয়ে থাকেন। শুধু ইরি মৌসুমে যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় মটর চালিত ২৮শ’ ১০ টি সেচ পাম্পের আওতায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে যথাযথ তদারকি না থাকায় সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকগণ দাবী সচেতন মহলের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, উপজেলায় মটর চালিত ২শ’৫০টি গভীর নলকূপ, ২৫শ’৩০টি স্যালো মেশিন ও ৩৪ টি পাওয়ার পাম্প রয়েছে। ইরি মৌসুমে প্রতিটি গভীর নলকূপের আওতায় স্থানভেদে ১শ’২০ থেকে দেড়শ’ বিঘা, প্রতিটি স্যালোমেশিনের আওতায় ৪০ থেকে ৫০ বিঘা ও পাওয়ার পাম্পের আওতায় ১৫০ থেকে ২০০ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ হয়। এর বাইরে ডিজেল চালিত ৩৪ টি গভীর নলকূপে, ১২ হাজার ৩শ’১০টি স্যালোমেশিনে ও ৬৮টি পাওয়ার পাম্পের আওতায় ধানের আবাদ হয়। চলতি ইরি মৌসুমেও অনুরুপ সেচ পাম্পের আওতায় ধানের আবাদ হবে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।  গত ২০০২ সাল থেকে মটর চালিত সেচপাম্পে মোট বিলের উপর শতকরা ২০ ভাগ ভুর্তকি দিয়ে আসছে সরকার। যা প্রতিমাসে বিলের সাথে সমন্বয় করা হয় বলে যশোর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-২ (যপবিস-২) সূত্রে জানাগেছে। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, প্রতিটি সেচ পাম্পের আওতায় কয়েকশ’ কৃষক তাদের ধানেেত পানি নিয়ে থাকে। উপজেলার লাউড়ী গ্রামের কৃষক মশিয়ার রহমান জানায়, ইরি মৌসুমে ধান রোপন থেকে ধান কাটার আগ পর্যন্ত তার জমিতে পানি দেয়া বাবদ সেচপাম্প মালিকের সাথে বিঘা প্রতি (৩৩শতক) ২হাজার টাকা চুক্তি রয়েছে। যপবিস-২ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার সালাউদ্দিন আল বিতার জানান, গত ২০১৪ সালে মোট মটর চালিত পাম্পের আওতায় ৪ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ১৩২ টাকা বিদ্যুৎ বিলের বিপরীতে ৮২ লাখ ১৪ হাজার ২২৬ টাকা ভুর্তকি প্রদান করেছে সরকার। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৫ সালে ৩ কোটি ৬৯ লাখ ৭৭ হাজার ১১৭ টাকা বিদ্যুৎ বিলের বিপরীতে ৭৩ লাখ ৯৫ হাজার ৪২৩ টাকা ভুর্তকি দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিপুল অংকের টাকা ভুর্তকি দেয়া হলেও পুরো সুবিধা ভোগ করেছে সেচ মালিক প। এর এক কানা কড়ির সুবিধা পায়নি প্রান্তিক কোন কৃষক। এ ব্যাপারে উপজেলার সেচপাম্প মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক হোসেন আলী অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষকদের ভুর্তকির সুবিধা না পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, বেশীর ভাগ সেচপাম্প মালিকরা কৃষকদের ভুর্তকির সুবিধা থেকে কৌশলে বঞ্চিত করছেন। উপজেলার আটঘরা গ্রামের ডিপটিউবওয়েল মালিক আব্দুস সাত্তার মোড়ল জানান, প্রান্তিক কৃষকরা কয়েক কিস্তিতে তাদের চুক্তিকৃত টাকা পরিশোধ করে। শেষ কিস্তিতে কৃষকদের কাছ থেকে ভুর্তকির টাকা বাবদ কম নেয়া হয়। উপজেলার জালালপুর গ্রামের ডিপ মালিক সুনীল কুমার ঘোষ বলেন, তার জানামতে কোন সেচ পাম্প মালিক ভুর্তকির টাকা কৃষকদের দেয় না। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল ইসলাম বলেন, মটর চালিত সেচপাম্পের (গভীর নলকূপ) আওতায় বিঘা প্রতি সর্বসাকুল্যে ৮’শ থেকে ১ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু কৃষকদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। আর সরকার কৃষকদের জন্য যে ভুর্তকি দিচ্ছে তার সুবিধা নিচ্ছে সেচ পাম্প মালিকরা। তার দাবী ভুর্তকির টাকা সরাসরি কৃষকদের হাতে পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করলে সরকারের সাফল্যের পাশাপাশি কৃষকরাও উপকৃত হতো। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, সেচ পাম্পের ভুর্তকির অর্থের ব্যাপারে তার অফিসের কোন নিয়ন্ত্রন নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভুর্তকি সুবিধা বঞ্চিত কৃষকরা তার কাছে অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।