ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৪ জুলাই ২০১৬
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রকাশনীর কোটি টাকার বই বানিজ্য । অভিভাকরা প্রতারিত

Tito
জুলাই ১৪, ২০১৬ ৩:২০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

8801716833434মনিরুজ্জামান টিটো ঃ
মণিরামপুরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, কিন্ডার গার্ডেন ও প্রি-ক্যাডেট স্কুল গুলোতে বিভিন্ন প্রকাশনীর বই পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভূক্তি করে শিক্ষার্থীদের কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভাবনীয় দামে বই কিনতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন অভিভাবকরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে ম্যানেজ করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রকাশনী প্রতিষ্ঠান গুলো।
তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়, মণিরামপুর উপজেলায় ১’শ ১৯ টি নিম্ম ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭০ টি মাদ্রাসা এবং প্রায় অর্ধশত কিন্ডার গার্ডেন রয়েছে। যেখানে মাধ্যমিক ও দাখিল পর্যায়ে ৩৭ হাজার ৩’শ ৩৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামুল্যে বই বিতরন করা হলেও বাংলা, ইংরেজি এবং আরবী ব্যাকরন ছাড়াও গাইড বই, টেষ্টপেপার, বাংলা ও ইংরেজি দ্রুত পঠন বাজার থেকে কিনতে হয়। প্রি-ক্যাডেট ও কিন্ডার গার্ডেন পর্যায়ে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। যেখানে প্লে-গ্রুপ, নার্সারী, কেজি ওয়ান, কেজি টু, প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে প্লে¬-গ্রুপ থেকে কেজি টু পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। এই চার স্তরে হাসান বুক ডিপো, স্যামসদ প্রকাশনী, ইমতিহাম, আল-ফাত্হা, জননী প্রকাশনী, হামিদিয়া ও পুস্তক ভবন কোম্পানীর বই পড়ানো হয়। যার প্রতি সেটের মুল্য ৭’শ-১২’শ টাকা। সেই হিসেবে এ স্তরেই কয়েক কোটি টাকার বই বিক্রি হয়। অপরদিকে প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত এনসিটিবি’র বইয়ের বাইরে সরকারী অনুমোদনহীন উল্লে¬খিত কোম্পানীর আরো ৫/৬ টি বই পড়ানো হয়। যার আনুমানিক মুল্য ৩০ লক্ষ টাকার বেশী। অভিভাবকদের অভিযোগ এসব বই ৫-১০ পৃষ্ঠা। যার মুল্য ১০ থেকে ২৫ টাকা হওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু সেই একই বইয়ের মূল্য ১’শ থেকে ২’শ টাকা হওয়ায় হতবাক করেছে অভিভাবকদের। এসব প্রকাশনী প্রতিষ্ঠান গুলো শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সাথে গোপন চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। এমনকি সমিতির নেতৃবৃন্দ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বিভিন্ন উপঢৌকন স্বরূপ বাড়িতে আসবাবপত্র থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল পর্যন্ত কিনে দেওয়ার গুঞ্জন রয়েছে প্রকাশনীর বিরুদ্ধে। তাদের সাথে দর কষা-কষিতে যাদের কাছ থেকে তুষ্ট হয়, তাদের বই কিনতে বাধ্য করা হয় শিক্ষার্থীদের। এতে শিক্ষক সমিতি’র নেতৃবৃন্দ ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের পকেট ভারী হলেও প্রতারিত হচ্ছে অভিভাবকরা। অভিভাবক আবু দাউদ জানান, নিন্ম মানের বই কিনতে বাধ্য করায় শুধু শিক্ষা ব্যবস্থাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্চে না, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গোটা জাতি। এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্যামসাদ প্রকাশনীতে কর্মরত এক প্রতিনিধি জানান, আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তেমন কোন অনুদান দিই না। তবে, কোন কোন প্রতিষ্ঠানে কিছু টাকা না দিলে অন্য কোম্পানীর বই চালাবে। অন্যদিকে অপর এক প্রকাশনীর প্রতিনিধি বলেন, চুক্তি মুলতঃ আমরা করিনা, কোম্পানীর বস’রা শিক্ষক সমিতির সাথে যা করার করে। মণিরামপুর শিক্ষক-কর্মচারী কল্যান সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকাশনীর বই চালানোর ব্যাপারে আমরা সমিতির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উন্নয়ন ফান্ডে কিছু অনুদান সমিতির মাধ্যমেই নেওয়া হয়। এব্যপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন খান জানান, এনসিটিবি অনুমোদিত বই ছাড়া সকল বই সরকারী ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে কোন প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই। তারপরও যদি কোন প্রতিষ্ঠান অনুমোদন বিহীন বই কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করে তাহলে অভিযোগ পেলে সে সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এব্যাপারে সরকারের সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের এখুনি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরী বলে মনে করেন অভিভাবক মহল।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।