ঢাকাসোমবার , ২১ নভেম্বর ২০১৬
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘বাল্য বিয়েকে লাল কার্ড’-ক্যাম্পেইনার বগুড়ার আনোয়ার বাইসাইকেলযোগে এখন মণিরামপুরে

Tito
নভেম্বর ২১, ২০১৬ ৩:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মনিরুজ্জামান টিটো:
‘হতে চাই না বিয়ের পাত্রী, হতে চাই স্কুলছাত্রী’ স্লোগানে বাল্য বিয়েকে লালকার্ড ক্যাম্পেইনার আনোয়ার যশোরের মণিরামপুরে তার প্রচারণা চালিয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে তিনি মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে তার প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করেন। এরপর তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে দেখা করার জন্য উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থান নেন। এরআগে সোমবার সকালে আনোয়ার কেশবপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রচারণা চালিয়ে সেখানকার ইউএনও’র সাথে দেখা করে নিজের ডাইরিতে তার স্বাক্ষর নেন। আজ মঙ্গলবার আনোয়ার ঝিকোরগাছার কোন একটি স্কুলে তার এই প্রচারণা চালাবেন।
আনোয়ার তালুকদারের বাড়ি বগুড়া সদর উপজেলার বারবাকপুর গ্রামে। তিনি কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা নন। পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি হয়েও ব্যাক্তি উদ্যোগে ও নিজ খরচে দেশের বিভিন্ন উপজেলার স্কুল ছাত্রীদেরকে বাল্য বিয়ের কুফল ও তা রোধকল্পে এই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।
সোমবার আনোয়ার তালুকদার এই প্রতিবেদকের মুখোমূখী হন। এসময় তিনি জানান, আপন দুই ভাগনি শিউলি ও মনোর বিয়ে হয়েছিল অল্প বয়সে। বেশি দিন তাদের সংসার টেকেনি। ৪-৫ বছর পর তাদের দু’জনের একটি করে সন্তান হওয়ার পর তারা তালাকপ্রাপ্ত হন। এর কিছুদিন পর তাদের ( শিউলি ও মনো) পিতা ট্যাক্সি ড্রাইভার সিদ্দিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর থেকে আনোয়ারের দুই ভাগ্নী পোশাক কারখানায় কাজ করছেন। আপন দুই ভাগ্নীর দুঃখ-কষ্ট দেখে এবং বাল্যবিয়ের ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে আনোয়ার এই প্রচারে নামেন। আনোয়ার জানান, আয়ের একমাত্র ফার্নিচারের দোকান বিক্রি করে,নিজের পুরানো সাইকেলটায় লাল রং করে এবং লাল রং এর পোশাক পরে ও লাল রঙের মাইক ব্যবহার করে ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারী থেকে তিনি বাল্য বিয়ের কুফল স্কুল শিক্ষার্থীদেরকে বুঝিয়ে বাল্য বিয়েকে লাল কার্ড দেখানোর প্রচারণায় সাইকেলে চড়ে যাত্রা শুরু করেন। ওই বছরের ২১ মার্চ পর্যন্ত ৬৭ দিনে তিনি দেশের ৬৪ জেলায় তার প্রচারণা চালান। এরপর চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার একটি স্কুলে প্রচারণার মাধ্যমে দেশের সব উপজেলায় তার এই প্রচারণায় নেমে পড়েন।
আনোয়ার তালুকদার বলেন, তার মিশন হচ্ছে প্রতি উপজেলার একটি করে বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রীদেরকে বাল্য বিয়ের ব্যাপারে সচেতন করা ও তাদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভার মেয়র ও থানার অফিসার ইনচার্জের মতামত সম্বলিত স্বাক্ষর নিজের ডাইরিতে সংরক্ষণ করা। পাশাপাশি কোন সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীর সাথে দেখা হলেও তিনি তাদের মতামত ও স্বাক্ষর সংরক্ষণ করে রাখেন। এই পর্যন্ত আনোয়ার ৪৯ টি স্কুলে তার প্রচারণা চালিয়েছেন। গত ১৪ নভেম্বর যশোরে এসে তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিনের স্বাক্ষর সম্বলিত মতামত নেন।
একপ্রশ্নের জবাবে আনোয়ার বলেন, নিজের দোকান বিক্রি করে সাইকেলে চড়ে এই প্রচারণা শুরু করেছি। তাছাড়া বড় ছেলে ব্যাবসা করে, প্রয়োজনে ছেলে আর্থিক সহযোগীতা করে। আগামীর পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই পর্যন্ত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় আমার ছবি সম্বলিত রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল আমাকে নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তাছাড়া ইত্যাদির পরিচালকের সাথে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে নিয়ে অনুষ্ঠান করতে চেয়েছেন। আগামী বছরে তিনি ডিসকভারি চ্যানেলে তার এই প্রচারণা চালানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে এই কাজে তিনি সরকারি সহযোগীতা কামনা করেছেন।

 

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।