ঢাকাশুক্রবার , ২১ জুলাই ২০১৭
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নেতা নির্বাচনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা চায় মনিরামপুরের তৃণমূল বিএনপি

Tito
জুলাই ২১, ২০১৭ ৯:৪৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ  প্রতিনিধি  ঃ
আসন্ন উপজেলা বিএনপি’র কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে মণিরামপুরে নেতা-কর্মীদের মাঝে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্যতার সৃষ্টি হয়েছে। শীর্ষ দু’টি পদ দখলের লড়াইয়ে একের পর এক শো-ডাউনসহ জেলা ও উর্দ্ধতন নেতাদের কাছে দৌড় ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন পদ প্রত্যাশীরা।
দলীয় বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, প্রায় আট বছর পর মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠন হতে যাচ্ছে। ২০০৯ সালে সর্বশেষ সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত উপজেলা কমিটি বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে। ইতিমধ্যে ১৭ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সর্বমোট ১৬২ টি ওয়ার্ডের কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে। কমিটি গুলো অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে জেলায় পাঠানো হয়েছে। জেলা বিএনপি পক্ষ থেকে সকল উপজেলা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নার্গিস বেগমকে প্রধান করে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানায়।
এদিকে দীর্ঘদিন পর কমিটি গঠনের খবরে নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি জেলা ও সিনিয়ার নেতা-কর্মীদের কাছে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন পদ প্রত্যাশীরা। বিশেষ করে শীর্ষ দু’টি পদ নিয়েই পৌরশহরসহ উপজেলাব্যাপী নেতা-কর্মীরা আলোচনায় সরগরম করে তুলেছেন।
উপজেলা বিএনপির দীর্ঘদিনের দু’টি বলয়ের মধ্যে বিদ্যমান গ্রুপিং বাইরেও এবার স্ব-স্ব গ্রুপের মধ্যে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় নতুনমাত্রা সৃষ্টি হয়েছে। সভাপতি পদে বিগত দিনের ন্যায় সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মুছা এবং বর্তমান সভাপতি শহীদ মো: ইকবাল হোসেনের নাম প্রচার পাচ্ছে। এর বাইরে তেমন কোন প্রার্থীও নাই। তবে দু’জন প্রার্থীই ইতিমধ্যে বিভিন্ন সময়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে ইমেজ সংকটের সম্মুখীন হয়েছেন। আলহাজ্¦ মো: মুছা ওয়ান ইলেভেনের পর দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে কর্নেল ওলি আহম্মেদের এলডিপি’তে যোগদানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের বিএনপি’র রাজনৈতিক জীবনে চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েন। সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাকালিন সময় থেকেই জনপ্রিয় এই নেতা অবশ্য পরবর্তীতে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর আবারো ঘরে ফিরে আসেন এবং সে বারেই বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে তিনি প্রায় ৯১ হাজার ভোট পান, তবে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মেরী ইকবাল তার থেকে প্রায় তিন হাজার ভোট বেশী পেয়েও পরাজিত হয়। মূলত: দল পরিবর্তন করায় তিনি তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। আবারো বিগত উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে ব্যর্থ হয়ে তিনি অনেকটা সরাসরি জামায়াত প্রার্থীর পক্ষে সাফাই নির্বাচনে অংশ নিলে তার দলীয় অবস্থান চরম ভাবে ক্ষতির সন্মূখীন হয়।
একই ভাবে বিগত বিএনপি সরকারের আমলে দলীয় নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়নসহ নানা কারণে তৃণমূলে কিছুটা হলেও জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন বর্তমান সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র এড. শহীদ মো: ইকবাল হোসেন। সর্বশেষ বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বর্তমান সাধারন সম্পাদক এস এম মশিউর রহমান মাত্র ১৫ হাজার ভোট পেলে চরম সমালোচনার মুখে পড়েন এড. শহীদ ইকবাল হোসেন। যার জের গুনতে হয়েছে সর্বশেষ পৌর নির্বাচনে। এ নির্বাচনে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীদের অনেকেই। মেনে নিতে হয়েছে পরাজয়।
দলের অপর গূরুত্বপূর্ণ সাধারন সম্পাদক পদের লড়াইয়ের দিকেই মূলত চেয়ে আছে নেতা-কর্মীরা। একটি পদের বিপরীতে প্রায় হাফ ডজন নেতা দৌড়-ঝাপ শুরু করেছেন। বিভিন্ন সময়ে উপজেলার একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তের নেতা-কর্মীদের খোঁজখবর নিতে দেখা গেছে অনেকেরই। বিশেষ করে কোন অসুস্থ বা মৃত নেতা-কর্মীর বাড়িতে পদ প্রত্যাশীদের পদচারণা উল্লেখ্যযোগ্য। এ দৌড়ে ছুটে চলেছেন বর্তমান সাধারন সম্পাদক ও শ্যামকুড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এস, এম মশিউর রহমান। বিগত উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে খুবই নগন্য ভোট পাওয়ার পর থেকে প্রায় বছর তিনেক তার দেখা পাওয়া না গেলেও কমিটি গঠনের খবরে আবারো সরগরম তিনি। প্রায় দু’ডজন রাজনৈতিক মামলায় আসামী হয়ে হুলিয়া নিয়ে এতোদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন বলে তার অনুসারীদের দাবি। একই পদ পাওয়ার আশায় রয়েছেন খানপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এড. মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে চাওয়া পাওয়ার শেষ পর্যায়ে তিনিও এ পদের জোর দাবিদার। অপর প্রার্থী রাজনৈতিক ক্লিন ইমেজিং লেডার খ্যাত এড. মকবুল ইসলাম। বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি। দ্বিতীয় বারের মতো সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন বিশেষ ‘কেয়ার অফ’এ। তবে রাজনৈতিক জীবন দশায় কোন ঝুঁকি বা হামলা-মামলায় জড়াতে হয়নি তাকে। সকল রাজনৈতিক দলের সাথে ক্লিন ইমেজ বজায় রাখায় নিজেকে অনেকটা হামলা-মামলার সেভ জোনে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। বিগত কয়েক বছরে উপজেলার কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর নামে হামলা-মামলা হলেন এড. মুজিবুর রহমান ও এড. মকবুল ইসলাম রয়েছে সে বলায়ের বাইরে। অপর প্রার্থী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কাউন্সিলর মফিজুর রহমান। তিনিও বহু মামলার আসামী। দলের দূর্দিনে তার ভূমিকা রয়েছে বেশ এগিয়ে। একসময় অর্থ সম্পাদক পদে থেকে দলে যোগান দিয়েছেন তিনি। অপর প্রার্থী ও সর্ব কনিষ্ঠ ইয়াং লেডার আসাদুজ্জামান মিন্টু। বয়সে তরুন হলেও তার রয়েছে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। সাধারন সম্পাদক পদে সর্বোচ্চ নেতা-কর্মীদের প্রিয় প্রার্থী হিসেবে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে তিনি উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি, উপজেলা যুবদলের সাধারন সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা যুবদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সাথে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক পদে। তিনিও প্রায় ডজন দু’য়েক রাজনৈতিক মামলার আসামী হয়ে জেল খেটেছেন বহুবার। তৃণমূলের মতামত প্রকাশের সুযোগ দেওয়া হলে তিনিই এগিয়ে থাকবেন এমন মন্তব্য পাওয়া গেছে বিএনপি দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।