ঢাকাশুক্রবার , ২৭ অক্টোবর ২০১৭
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যশোর-৫, মণিরামপুর : মনোনয়ন তৎপরতায় বিরোধী জোটের ৬ নেতা : কাউকে ছাড় দিতে নারাজ শরীকরা

Tito
অক্টোবর ২৭, ২০১৭ ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মনিরুজ্জামান টিটো ॥
সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে যশোর-৫, মণিরামপুরে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পাশাপাশি ততই দৌড়ঝাপ দিচ্ছেন বিরোধী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও। বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতারা স্ব-স্ব দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রিয় লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ জোরে-সোরে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দলীয় কর্মকান্ডেন বহর প্রদর্শন করে চলেছেন বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রায় হাফ ডজন নেতা।
বিরোধী জোটের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির স্থানীয় দলীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, জোটগত কারণে বিগত দিনে আসনটির মনোনয়ন শরীকদের ছেড়ে দিলেও এবারে আর ছাড় দিচ্ছেনা হাইকমান্ড। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তাই দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে বিএনপির তিন নেতা লবিং অব্যহত রেখেছেন। মনোনয়ন দৌড়ে যশোর জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: মুছা, উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র এড শহীদ মো: ইকবাল হোসেন এবং সাবেক ছাত্রনেতা ইফতেখার সেলিম অগ্নিৱ নাম শোনা যাচ্ছে।
বর্ষিয়ান নেতা মো: মুছা তিন তিন বার চালুয়াহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পরবর্তীতে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বর্তমানে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো: মুছা দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতিমধ্যে হাইকমান্ডের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি নিজ বলয়ের নেতা-কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত দলীয় কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
দলের বর্তমান সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র এড শহীদ মো: ইকবাল হোসেন সদর ইউনিয়নের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তীতে মণিরামপুর পৌরসভার দু’বারের মেয়র নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ছিলেন তিনি। বর্তমানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। প্রায় দু’ডজন রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে এবং সভাপতির দায়িত্ব পালনের সুবাদে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের কাছে বিএনপির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে তিনি স্থান করে নিয়েছেন। দলের চরম দূর্দিনে হামলা-মামলার শিকার হয়ে ইতিমধ্যে তিনি জেলা তথা কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দের কাছেও বেশ প্রিয় হয়ে উঠেছেন বলে দাবি করেন অনেকেই। ইতিপূর্বে বিএনপি’র টিকিটে ধানের শীষ মার্কা নিয়ে দু’বার সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন শহীদ ইকবাল। এবারও দলীয় হাইকমান্ড তাকেই মনোনয়ন দিবেন বলে তার সমর্থকরা বেশ প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিএনপির অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাত্রদলের সাবেক নেতা ইফতেখার সেলিম অগ্নি। ঢাকুরিয়া-ভোজগাতী ইউনিয়নের বাইরে মণিরামপুরে তার পদচারনা বা পরিচিতি তেমন একটা নেই বললেই চলে। বয়সে তরুন এ নেতা সম্প্রতি এক মতবিনিময়ের মাধ্যমে বিএনপি’র অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রিয় নেতা পরিচয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তবে মণিরামপুরের হাল আমলের রাজনীতিতে তিনি অপরিচিত মুখ হওয়ায় গূরুত্ব দিচ্ছেনা স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি এড শহীদ ইকবাল হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের হামলা-মামলার শিকার হয়েও দলের জন্য নির্ভিক-নিরলসভাবে কাজ করে চলেছি। শরীক অন্যদের কোন অংশগ্রহন না থাকলেও আমি বিএনপি’র সকলস্তরের নেতা-কর্মীদের একত্রিত করে কেন্দ্রিয় সকল কর্মসূচী পালন করে চলেছি। তিনি আরো বলেন, জোট থেকে আগামী নির্বাচনে এ আসনে বিএনপিকে তথা আমাকেই মনোনয়ন দিবেন বলে আশাবাদি।
এদিকে বসে নেই শরীক দল জামায়াত ইসলামীর নেতা এড গাজী এনামুল হক। তিনিও শরীকদের কাছ থেকে আসনটির মনোনয়ন নিতে কেন্দ্রিয় পর্যায়ে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রিয় এ নেতা সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আমাজাদ হোসেন লাভলুর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন।
অপরদিকে জামায়াত ইসলামীর উপজেলার সাবেক আমীর ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফজলুল হকও মনোনয়ন চাইবেন বলে প্রচার পাচ্ছে। তিনি বলেন, বিগত দু’টি নির্বাচনে কেন্দ্রিয় স্বার্থে জমিয়তকে আসনটি ছেড়ে দিলেও, বর্তমান সরকারের আমলে জোটের কোন কর্মসূচীতে তাদেরকে দেখা যায়নি। তাছাড়া তারা ইতিমধ্যে সরকারের সাথে আতাত করে চলছে। আর গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর প্রার্থী বিএনপি’র প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ছয় গুন ভোট বেশী পেয়েছিলো। যেসকল কারনে এ আসনটিতে জোটের মনোনয়ন জামায়াত ইসলামই পাবে।
তবে লবিং যাইহোক স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা যশোর-৫, মণিরামপুর আসটিতে বিএনপি এবং জামায়াত ইসলামীর মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সবচেয়ে বড় আতংকেরও কারণ রয়েছে জোটের অন্যতম শরীক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। এ আসন থেকে জোটের মনোনয়নে দু’বার জাতীয় নির্বাচন করেছেন দলটির কেন্দ্রিয় নির্বাহী আমীর ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কস। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়ে জয়লাভের মাধ্যমে রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করেন এই ধর্মীয় নেতা। এরপর এরশাদ সরকারের মন্ত্রীসভায় প্রতিমন্ত্রীর স্থান করে নেন তিনি। এরশাদের পতন হলে আর দেখা যায়নি তাকে। ২০০১ সালের নির্বাচন পূর্বসময়ে ধর্মীয় দলগুলো নিয়ে বিএনপি গঠিত জোটে ঢুকে মণিরামপুর থেকে জোটের মনোনয়নে ধানের শীষ মার্কা নিয়ে আবারো ফিরে আসেন রাজনীতির মাঠে। ওই নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের সকল শরীক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের চোখে ধুলো দিয়ে ধানের শীষ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তীতে আবারো একই মার্কা নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও সদ্য প্রয়াত আওয়ামলীগ নেতা খান টিপু সুলতানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। এরপর থেকে কেন্দ্রিয় বিভিন্ন কর্মসূচীতে দেখা গেলেও স্থানীয়ভাবে তার কোন কর্মকান্ড চোখে পড়েনা। তবে এবারও জোটের স্বার্থে তিনি এ আসনটি থেকে মনোনয়ন পাবেন বলে ধারনা করছেন স্থানীয় জোটের নেতারও। বিএনপির শরীক দল হিসেবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সারাদেশে একটি আসন দিলেও, সে আসনটি যশোর-৫ হবে বলে স্থানীয়দের দৃঢ় বিশ্বাস। সেক্ষেত্রে এবারও বিএনপির ধানের শীষ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করতে পারেন তিনি

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।