ঢাকারবিবার , ১৪ জানুয়ারি ২০১৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ব্রকলি চাষে সফল মণিরামপুরের চাষীরা

Tito
জানুয়ারি ১৪, ২০১৮ ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মনিরুজ্জামান টিটো :
শীতকালীন ফসলের মধ্যে ব্রকলি একটি জনপ্রিয় ও পুষ্টিগুনে ভরপুর সবজি জাতীয় ফসল। দেখতে ফুলকপির মতোই, তবে রঙ্গে ভিন্ন। গাঢ়ো সবুজ ব্রকলি পুষ্টি মানে সেরা সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। পুষ্টি গুনে সেরা তালিকাভুক্ত ব্রকলি অর্থনৈতিক ভাবেও বেশ এগিয়ে রয়েছে। এর রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। পুষ্টবিদদের মতে ডায়াবেটিসক ও হার্টের অসুখে ব্রকলি বেশ কার্যকরী সবজি। দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় মণিরামপুরেও এর চাষ শুরু হয়েছে। বানিজ্যিকভাবে ব্রকলি চাষ করে সফল মণিরামপুরের চাষীরা।
সরেজমিন উপজেলা রোহিতা ইউনিয়নের পলাশী গ্রামে দেখা যায় একাধিক ব্রকলির ক্ষেত। বছর তিনেক আগে ওই গ্রামের সৌখিন চাষী প্রদীপ বিশ্বাস সর্বপ্রথম চাষ শুরু করেন ব্রকলি’র। প্রথম বছরেই সফলতার মুখ দেখে আবারো শুরু করেন ব্রকলি চাষ। এবারও প্রায় আড়াই হাজার ব্রকলির চারা রোপন করেছেন তিনি। প্রতিটি গাছেই ইতিমধ্যে ফুল এসেছে। তার দেখা দেখি ওই এলাকার শুকুমার মন্ডল, রতন বিশ্বাস, তাপস মন্ডল, মিজানুর রহমান, শ্রীনিবাস বিশ্বাসসহ অনেকেই ঝুকে পড়েছেন ব্রকলি চাষে। প্রায় এক একর জমিতে চাষ করা হয়েছে ব্রকলি।
আমাদের দেশে সাধারনত শীতকালে হরেক রকমের সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। এসময় ফুলকপি অধিকহারে বাজারের আসায় অনেকটা দাম কমে যায়। ফলে চাষীরা দাম না পেয়ে হতাশায় পড়েন। যে কারনে একই রকম ফসল হিসেবে ব্রকলি চাষকে লাভজনক মনে করছেন চাষীরা।
কথা হয় ব্রকলি চাষী প্রদীপ বিশ্বাসের সাথে। জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন এনজিও’র চাকরী শেষ করে বাড়িতে ফিরে এসে শুরু করেন ড্রাগন চাষ। তার প্রায় ৬০ টির অধিক ড্রাগন গাছে ফল দিয়েছে। এর পর তিনি একটি বেসরকারী সংস্থার পরামর্শে শুরু করেন ব্রকলি চাষ। প্রথমে তাদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে অক্টোবর মাসে বীজ তলায় ছিটিয়ে চারা তৈরী করেন। এর পর চারা রোপন করেন মুল জমিতে। পরবর্তী বছরে স্থানীয় কৃষি দপ্তরের সহায়তায় আবারো উন্নত মানের বীজ সংগ্রহ করে তিনি আবারো চাষ করেন ব্রকলির। এবারও সফল তিনি। তার দেখাদেখি গ্রামের অন্যান্য চাষীরা তার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে ব্রকলি চাষ শুরু করেন। চারা তৈরী করে তিনি কৃষি অফিসের মাধ্যমে বাইরেও বিক্রি করেছেন বলে জানান।
চাষীরা জানান, ব্রকলির বাজারদর বেশ ভালো। ফুলকপির মতো একই ফসল হওয়ার পরও ফুলকপির চেয়ে প্রায় তিনগুন দামে তা বাজারে বিক্রি করা যাচ্ছে। পক্ষান্তরে ব্রকলি অনেকটা রোগ সহিষ্ণু হওয়ায় ফুলকপির চেয়ে তুলনামূলক ভাবে উৎপাদন খরচ কম।
তারা জানান, প্রায় সব গাছেই ফুল এসছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তা সংগ্রহ করে বাজারজাত করা যাবে। শহরের কয়েকটি সুপার সপ থেকে অগ্রিম অর্ডার করে রাখা হয়েছে ব্রকলির। স্থানীয় কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহযোগীতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন চাষীরা। তবে ব্রকলি চাষে আরোও সরকারী পৃষ্টপোষকতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
ব্রকলি ক্ষেতে দেখা মেলে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তুহিন কুমার বিশ্বাসের সাথে। তিনি জানান, আর্লি গ্রীন জাতের ব্রকলির বীজ অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বীজতলায় বপন করা হয়। পরে নভেম্বরের শুরুতে তা মুল ক্ষেতে রোপন করা হয়ে থাকে। বীজ বপন হতে ৬০ দিনের মধ্যে এতে ফুল আসে। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে সম্পূর্ণ রাসায়নিক সার ও বিষমুক্ত পদ্ধতিতে ব্রকলি চাষ করা হচ্ছে। ব্রকলির জমিতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করা হচ্ছে।
মণিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, মেধা বিকাশ, চোখের দৃষ্টি বৃদ্ধি, ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রন, রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধিসহ মানবদেহের গৌন পুষ্টি বজায় রাখার পাশাপাশি ব্রকলি উচ্চ অর্থনৈতিক লাভবান ফসল। এ উপজেলার প্রায় সব এলাকার মাটি ব্রকলি চাষের উপযোগী। তাই আগামীতে ব্রকলি চাষের মাধ্যমে চাষীদের অর্থনৈতিক ভাবে সফল করতে কৃষি দপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।