ঢাকাশনিবার , ২৩ মার্চ ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নবীন-প্রবীনদের ভোট যুদ্ধে উৎসবের আমেজ

Tito
মার্চ ২৩, ২০১৯ ৫:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিনিধি ।।
মণিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়াই হবে নবীন-প্রবীনের। ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনকে সামনে রেখে নবীন-প্রবীনের শেষ মুহূর্তের ভোটের লড়াই এখন ভোট উৎসবে পরিণত হয়েছে, বয়ে যাচ্ছে নির্বাচনী আমেজ। এ পদের বিপরীতে এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ প্রার্থী জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। প্রবীণ প্রার্থীর তালিকায় আছেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিকাইল হোসেন ও সাবেক উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসেম আলী। তাছাড়া নবীন প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষন করার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু ও সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সন্দীপ ঘোষ। এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার সাথে জমজমাট লড়াই হবে নবীনদের। সেক্ষেত্রে পাল্লাটা নবীনদের দিকেই ঝুকে আছে।
জানাযায়, আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৪র্থ ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মণিরামপুর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী ৪ প্রার্থীই সভা-সমাবেশ, গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিজ-নিজ অবস্থান থেকে প্রার্থীরা নিজেদের ভোটের পাল্লা ভারী করতে প্রচারনার শেষ মুহুর্তের দিকে কোমর বেঁধে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ভোট গ্রহণের আর মাত্র সপ্তাহ খানেক বাকী থাকলেও প্রচার-প্রচারনার সময় পাবেন ৫ দিনের মত। বাকী ক’দিন ভোটারদের মনযোগ আকর্ষন করতে সেই কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা গণসংযোগ, মতবিনিময়, নির্বাচনী সভা, পথসভা ও উঠান বৈঠক করে নিজেদের ভোটের পাল্লা ভারী করার চেষ্টা অব্যহত রেখেছেন। তবে অভিজ্ঞজনের ধারনা, প্রার্থীরা ছুটে বেড়ালেও ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে অনেকটা অনিহা প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন নির্বাচনী পরিবেশ সূষ্ঠু ও সহনশীল থাকলে এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকারা প্রয়োগ করতে পারলে এ উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে চমক আসতে পারে।
এ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে অন্যতম পদ প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মিকাইল হোসেন। তিনি পূর্বে একবার ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে ছিলেন এবং ৪র্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজয় বরণ করেছিলেন। কিন্তু অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ও পূর্ব অভিজ্ঞকতাকে কাজে লাগিয়ে চশমা প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন এবং আবারও জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। দ্বিতীয় বার বিজয়ের স্বপ্নে কর্মী সমর্থকদের সাথে নিয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি। কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে ছুটছেন। সেক্ষেত্রে পূর্বে জনপ্রতিনিধিত্ব ও নির্বাচনী করার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অনেকটা এগিয়ে আছেন তিনি-এমন ধারনা করছেন তার সমর্থকেরা। যদিও তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকেরা সেটা মানতে নারাজ।
প্রবীণ প্রার্থীর তালিকায় আছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাসেম আলী। তার নির্বাচন করার পূর্ব অভিজ্ঞতাসহ দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলা আ’লীগের গুরুত্বপূর্ন পদে আসিণ থেকে জাতীয় নির্বাচনে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করার অভিজ্ঞতা। সেক্ষেত্রে জয়ের ব্যাপারে তিনিও আশাবাদী।
এদিকে নবীন প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু। যুবলীগের আহবায়ক হওয়ার সুবাদে উপজেলা যুবলীগের বেশির ভাগ নেতৃবৃন্দ বাচ্চুর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা জ্বয়ের বিকল্প কিছু ভাবছেন না। জয়ের ব্যাপরে কতটুকু আশাবাদি জানতে চাইলে উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের দিকে ঝড়ের গতিতে ধাবিত হয়েছে। এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সর্বক্ষেত্রে দলের আর্দশিক ব্যক্তিদেরই ভোটাররা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। তাছাড়া আমি যুবলীগের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে উপজেলা যুবলীগকে অনেক শাক্তিশালী ও সুসংগঠিত করেছি। সুতরাং আমার বিশ্বাস ভোটাররা তাদের নিজ বিবেচনায় আমাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
অপরদিকে নতুন প্রার্থী হিসেবে আছেন সাবেক জেলা ও উপজেলা ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী পরিশ্রমি নেতা সন্দীপ ঘোষ। বর্তমান উপজেলা আ’লীগের তরুণনেতা হিসেবে সমাধিক পরিচিত এ প্রার্থীর রয়েছে নিজেস্ব একটি রাজনৈতিক বলয়। অভিনব প্রচার-প্রচারনা ও গণসংযোগে প্রতিপক্ষ সকল প্রার্থীকে পেছনে ফেলে ভোটের পাল্লা অনেকটাই ভারী করে ফেলেছেন তিনি-এমন ধারনা করছেন তার কর্মী সমর্ধকেরা। সন্দীপ ঘোষের স্বর্গীয় বাবা সুভাষ ঘোষ ছিলেন মণিরামপুর উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে একজন পরিচিত ব্যক্তি। শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজনৈতিক কাজে বেশি সময় ব্যয় করতেন তিনি। শুধু রাজনীতি সময় দেয়ার জন্য এক সময় শিক্ষাকতা পেশাটি ইস্তেফা দিয়ে রাজনীতিতেই সদা তৎপর ছিলেন তিনি। তারই হাত ধরে ছাত্রাবস্থায় এক সময় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন সন্দীপ ঘোষ। বাবার মত একজন পরিছন্ন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সবাইকে খুব অল্প সময়ে আপন করে নিতে পারার গুনটিও রয়েছে তার। সেই তরুণ বয়সেই ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার সৌভাগ্য হয় তার। পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌসভা নিয়ে গঠিত উপজেলার প্রতিটি এলাকায়ই রয়েছে তার ব্যপক পরিচিতি ও সুনাম। রাজনৈতিক অঙ্গনের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে সন্দীপ ঘোষের পদচারনা পড়েনি। ফলে বিজয়ের ক্ষেত্রে তিনি অনেকটাই এগিয়ে আছেন বলে তার কর্মী সমর্থকদের দাবী। নিজের রাজনৈতিক পরিচয় ও দলীয় ইমেজ কাজে লাগিয়ে ৩১ মার্চ নির্বাচনী বৈতরনী পাড়ি দিতে চান তিনি। তার কর্মী-সমর্থকেরাও মনে করেন বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হবেন। এক প্রশ্নের জবাবে সন্দীপ ঘোষ বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ দলের কাজ করেছি। এলাকার মানুষের সূখে-দুঃখে পাশে রয়েছি। জীবনের সব টুকু সময় আমি দলের জন্য কাজ করেছি। আগামী দিনগুলোতেও মানুষের পাশে থাকতে চাই।
তবে যায় হোক না কেন? ৪ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীই একই দলের হওয়ায় দলীয় নেতা কর্মীরা দ্বিধা-দ্বন্ধে বিভক্ত হয়ে পড়ায় একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পড়তে হচ্ছে প্রার্থীসহ ভোটারদের। সেক্ষেত্রে কে জয়লাভ করবেন সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ৩১ মার্চ মধ্য রাত পর্যন্ত।

** নূরুল হক, মনিরামপুর **

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।