ঢাকাবুধবার , ১৮ মার্চ ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মনিরামপুরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পূর্বেই দুই সেতুতে ফাঁটল : নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার

Tito
মার্চ ১৮, ২০২০ ৩:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মনিরুজ্জামান টিটো।।
মনিরামপুরে বাকের খালের ওপর সেতু নির্মান হতে না হতেই ফাঁটল দেখা দিয়েছে। শুধু বাকের খালের ওপর নির্মিত এ সেতুই নয়, পার্শ্ববর্ত বালিয়ার খালের ওপর অপর একটি নির্মানাধীন সেতুর স্প্যানে ফাঁটল এবং রেলিং ধ্বসে রড বেরিয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের সামগ্রি দিয়ে নির্মান এবং সঠিকভাবে দেখভালের অভাবে সেতুতে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে এ ব্যাপারে সম্পূর্ন নীরব। তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সেতুর সব ত্রুটি সম্পন্ন করার। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস জানান, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে মনিরামপুর উপজেলায় গ্রামীণ রাস্তায় ১৪, ১৫ এবং ১৬ মিটার দৈর্ঘ্যের মোট ২৩ টি সেতু নির্মানের জন্য বরাদ্দ হয় তিন কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার ৮৩১ টাকা। ইতিমধ্যে এসব সেতু নির্মানের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে।
ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এসব সেতু নির্মান সম্পন্নের নির্দেশনা রয়েছে ঠিকাদারদের প্রতি। এর মধ্যে মনোহরপুর ইউনিয়নের খাকুন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বাকের খালের ওপর ১৪ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি নির্মানের জন্য বরাদ্দ হয় ১২ লাখ ৯৪ হাজার ৬৬৬ টাকা। টেন্ডারে এ কাজটি পান যশোরের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স সিথি এন্টারপ্রাইজ।ইতিমধ্যে এ সেতুটি নির্মান কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু নির্মানের কয়েকদিনের মধ্যে সেতুর রেলিং এবং স্প্যানের গোড়ায় বড় বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখাযায় এ সেতুর রেলিংয়ের গোড়ায় পা দিয়ে সামান্য আঘাত করতেই পাথর এবং বালি খসে খসে পড়ছে। এ সময় দেখা হয় পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা শাহাজাহানের সাথে। তিনি জানান, অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রি দিয়ে সেতুর ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে সঠিকভাবে দেখভাল না করায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অধিকলাভের আশায় অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রি দিয়ে নির্মান করায় এমনটি হয়েছে।
এ নিয়ে কথা হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক সমির মিত্রের সাথে। তিনি জানান, কাজটি লটারীতে পাবার পর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারের(পিআইও) মধ্যস্থতায় ১০% লাভে মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজের কাছে বিক্রি করা হয়। তার পর থেকে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ। তবে পিআইও আব্দুল্লাহ বায়োজিদ এ অভিযোগ অস্বীকারের পর ক্ষোভপ্রকাশ করে জানান, শুধু ঠিকাদার নয়, প্রায় সকলেই পিআইওর নাম ভাঙ্গিয়ে পার পেতে চায়।অন্যদিকে পশ্চিম মনোহরপুর কুন্ডুপাড়ার বালিয়ার খালের উপর অপর একটি সেতু নির্মানের জন্য ওয়ার্কঅর্ডার দেওয়া হয় মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজকে। সেতুর কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু ইতিমধ্যে সেতুর রেলিং এবং স্প্যানের গোড়া বা ওয়ালে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সুরেশ চন্দ্র মন্ডল অভিযোগ করেন অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রি দিয়ে রাতে ঢালাই দেয়া এবং ঠিকমত দেখভাল না করায় ব্রিজের একপাশ ফেটে গেছে এবং রেলিং ধ্বসে রড বেরিয়ে পড়েছে।
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় সুমন কুন্ডু, মেনকা ক্ষত্রি, অর্পনা ক্ষতি, দেবাশীষ মন্ডলসহ এলাকাবাসী। মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিয়ুর রহমান জানান, সেতু দুটি নির্মানে সঠিক পরিমান উপকরনের(সিমেন্ট) পরিবর্তে বালুর পরিমান বেশি দেওয়া এবং ঢালাইয়ের পর ঠিকমত কিউরিং( পানি না দেওয়া) না হওয়ায় ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ফলে এ ভাবে সেতু নির্মান করা হলে ঝুকি আরো বেড়ে যাবে। তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজের মালিক হাবিবুর রহমান সাগর কোনপ্রকার অনিয়ন বা নিম্নমানের সামগ্রি ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, নির্মান কাজের মান উনিশ-বিশ হতে পারে।তবে ফেটে যাওয়া অংশ অবশ্যই মেরামত কের দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। সেতু নির্মানে কোনপ্রকার ত্রুটি মেনে নেওয়া হবেনা উল্লেখ করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আব্দুল্লাহ বায়োজিদ জানান,ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন অফিসার সানোয়ার হোসেন জানিয়েছেন তিনি নিজে সেতু পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।