ঢাকাশনিবার , ৪ এপ্রিল ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে চাউল কান্ডে প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে জড়িত থাকার অভিযোগ : উচ্চতর তদন্ত দাবী

Tito
এপ্রিল ৪, ২০২০ ১১:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিনিধি।।
মণিরামপুর সাড়ে পাঁচ’শ বস্তা সরকারী চাউল পাঁচারকালে আটক আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘনটাস্থলে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু ও সরকারী খাদ্য গুদামের অফিসার ইনচার্জ (ওসি এলএসডি)সহ আরো চারজনের নাম উল্লেখ করেছেন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ ও সাংবাদিকসহ উপস্থিত স্থানীয় উৎসুক জনতা তার স্বীকারোক্তি শুনেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে আটক মামুনকে থানায় আনার পর তাকে বয়ান পরিবর্তনের জন্য চাঁপ প্রয়োগের আশংকা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। বিষয়টি সোস্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

একাধিক সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে ডিস ব্যবসায়ী উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু আওয়ামীলীগের বিগত সরকারের আমলে মামা স্বপন ভট্টাচার্য্যের কল্যানে আকষ্মিক উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হয়ে উন্মুক্ত রাজনীতিতে পা রাখেন। সেই সময়ে অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক কমিটি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ওই কমিটির অনুমোদন দেয়। এর বছর দু’য়েক পরে বর্তমান সরকারের মন্ত্রীসভায় মামা স্থানীয় এমপি স্বপন ভট্টাচার্য্য স্থান পাওয়ার পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু। নির্বাচিত হয়েই শুরু করেন দলিয় নেতা-কর্মীদের হয়রানী, হামলা ও দখলদারিত্ব। এক পর্যায়ে উপজেলায় বরাদ্দকৃত টিআর’ কাবিখা’র চাউল ক্রয় সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রন নেন তিনি। উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে চলতে থাকে চাউল ক্রয় সিন্ডিকেট। টিআর-কাবিখা প্রকল্পের সকল খাদ্য শস্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহায়তায় প্রকল্প সভাপতিদের বাজারের তুলনায় কম দামে নাম মাত্র মূল্যে সিন্ডিকেটে বিক্রি করতে বাধ্য করা হতো বলে একাধিক প্রকল্প সভাপতি জানান।

শনিবার সরকারী সীলমোহরকৃত পাঁচ’শ ৪৯ বস্তা চাউল সরকারী খাদ্য গুদাম হতে ব্যাক্তি মালিকানাধীন গোডাউনে পাঁচার হয়ে আনলোডকালে বিজয়রামপুর বাঁধাঘাটা এলাকার ভাই ভাই রাইস মিলের আব্দুল্লাহ আল মামুনকে হাতে নাতে আটক করে মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমা খানম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরীফ, প্রেসক্লাব সভাপতি ফারুক আহম্মেদ লিটন, সাধারন সম্পাদক মোতাহার হোসেনসহ অনেকেই। এসময় উৎসক জনতা ও উপস্থিত ব্যাক্তিবর্গের সন্মূখে আটক মামুন জানায়, আটককৃত চাউল তিনি সরকারী গুদামের চাউল ক্রয় সিন্ডিকেট হতে কিনেছেন। এ ক্রয়ের সাথে ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু ও ওসি এলএসডিসহ চারজন জড়িত বলে তিনি জানান। তার এই বয়ানের সত্যতা জানিয়েছেন উপস্থিত অনেকেই।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবার সামনে বয়ান দেওয়ার সময় তাকে পুলিশ বাঁধা দেয় এবং সাথে সাথে তাকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। এরপর পুলিশ বাদি হয়ে মামুনকে আসামী করে একটি মামলা রেকর্ড করেছে।

মণিরামপুর উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মুন্নার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে পরে কথা বলছি।’

মণিরামপুর থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমরা চালভর্তি ট্রাকসহ রাইচ মিলের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে হেফাজতে নিয়েছি। এই ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, ‘চালসহ চাতালের পরিচালককে পুলিশের জিম্মায় দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবেন। তাছাড়া আমরা এই বিষয়ে আলাদা একটি তদন্ত করব।’

এঘটনায় মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারী চাউল যেহেতু, সেহেতু এটা সংশ্লিষ্ট দপ্তর আর যেখানে পাওয়া গেছে তাদের ব্যাপার। আমার কিছুই জানা নেই।
এদিকে থানায় আনার পর তাকে বয়ান পরিবর্তনের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হতে পারে বলে আশংকা করেছেন এলাকার সচেতন মহল। তাদের দাবি, সরকারী চাল চুরির ঘটনা উচ্চতর তদন্তপূর্বক এঘটনায় জড়িত ও দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।