ঢাকারবিবার , ২৬ এপ্রিল ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মাদানীনগর মাদরাসায় পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলায় মুফতিকে চাকুরিচ্যুতির অভিযোগ : ক্ষোভ

Tito
এপ্রিল ২৬, ২০২০ ৩:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নূরুল হক, মণিরামপুর থেকে।।
মণিরামপুরে একটি কওমী মাদ্রাসার বেতন-স্কেলসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনায় আত্মীয়-পরিবারতন্ত্রে পরিণত করার তথ্য ফাঁস করার সন্দেহে ও তাবলীগ জামায়াতকে ইস্যু করে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে চাকুরীচ্যুত করাসহ একটি মসজিদের ইমাম পদ থেকে বহিষ্কার করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মসজিদের মুসল্লীসহ কমিটির অধিকাংশ সদস্যরা তাৎক্ষণিক ক্ষোভ প্রকাশ করে ফুঁসে উঠেছেন। রবিবার আছরের নামাজের পর পৌর শহরে এ ঘটনা ঘটে।
জানাযায়, যশোর চাঁচড়া এলাকার মুফতি মাসউদুর রহমান দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মণিরামপুর মাদানী নগর কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষাকতার পাশাপাশি পৌর শহরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ইমামতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। উক্ত মসজিদ কেন্দ্রীক বিভিন্ন সময় তাবলীগ জামায়াতের অবস্থানসহ মুসল্লীদের অধিকার সম্পর্কে ইমাম মাসউদুর রহমান কথা বলে আসছিলেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মসজিদ কমিটির সভাপতি সাবেক কেন্দ্রীয় ৪ দলীয় জোটের এমপি মুফতি ওয়াক্কাস পক্ষের সদস্য মাওলানা আব্দুস সামাদ ও মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোয়াক্কেল হোসেনসহ অপর এক সদস্য তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। অপরদিকে, মাদানী নগর কওমী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি ওয়াক্কাস মসজিদের ইমাম মাসউদুর রহমানকে তার প্রতিষ্ঠানে ১০ হাজার ৫’শ টাকা বেতনে চাকুরীর ব্যবস্থা করেন। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, কওমী মাদ্রাসা কেন্দ্রীক প্রতিষ্ঠানে সকল শিক্ষকদের বেতন-স্কেল বেশী পার্থক্য হয়না। অভিযোগ রয়েছে মুফতি ওয়াক্কাস নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিমাসে বেতন তোলেন ৩৫ হাজার টাকা। তার মেঝ ছেলে মাওলানা রশিদ আহম্মেদ ২০ হাজার ৫’শ টাকা, বড় ছেলে মাওলানা সুহায়েল আহমাদ ২০ হাজার ৫’শ, তার ভায়রা মাওলানা আব্দুস সামাদ ১৮ হাজার ৫’শ, বড় জামাই মাওলানা আশরাফুজ্জামান ১৮ হাজার ৫’শ ছোট ছেলে মাওলানা হুসাইন আহমাদ ১৮ হাজার ৫’শ, ছোট জামাই মাওলানা নাজমুল শাকিব ১৪ হাজার টাকা বেতন নিয়ে আসছেন। এছাড়া, তার ভাগ্নে, মেয়ে, বৌমা ও ভায়রার মেয়েসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের ওই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেয়া হয়েছে। তবে, একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মুফতি মাসউদুর রহমানের আলেম, হাফেজ ও কামেল শিক্ষাগত যোগ্যতার বিপরীতে বেতন মাত্র ১০ হাজার ৫’শ টাকা। উক্ত মাদানী নগর মাদ্রাসার বেতন-স্কেলসহ আত্মীয়-পরিবারের সমন্বয়ে চাকুরীর বিষয়টি শিক্ষক মুফতি মাসউদুর রহমান বিভিন্ন স্থানে ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়। সে কারণে, সম্প্রতি তাকে ওই মাদ্রাসা থেকে চকুরীচ্যুত করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল রবিবার সকাল ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জরুরী মিটিং আহ্বান করা হয়। উক্ত মিটিং-এ হাতে গোনা কয়েকজনের উপস্থিতিতে সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাসের নির্দেশে ওই মসজিদের ইমাম মুফতি মাসউদুর রহমানকে জোহরের নামাজ পড়িয়ে মসজিদ থেকে বিদায় নিতে বলা হয়। বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে, সীমিত আকারে মসজিদে আছরের নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিহ এবং ইতিপূর্বে মসজিদে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারী মুসল্লিহরা জানতে পারেন ইমাম মুফতি মাসউদুর রহমানকে মসজিদ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে অনেক মুসল্লিহ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, ইমাম সাহেবের উপর জুলুম করে বড় অন্যায় করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, মসজিদ কমিটির সদস্য ডাক্তার আব্দুল আজিজ বলেন, দীর্ঘ দিনের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ বর্তমানে তাবলীগ জামায়াতে পরিণত করা হয়েছে। এছাড়া কমিটির অধিকাংশ সদস্যদের নানা অভিযোগ রয়েছে মসজিদ পরিচালনা নিয়ে। চাকুরীচ্যুতির সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে, মুফতি মাসউদুর রহমান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে লোক মুখে শুনে তার বিরুদ্ধে অন্যায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি আরো অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, এই মুহুর্তে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন। ইমাম মুফতি মাসউদুর রহমানকে মসজিদ থেকে বিতাড়িত করা ও তাকে মাদ্রাসা থেকে চাকুরীচ্যুত করা সম্পর্কে জানতে চাইলে, মসজিদ কমিটির সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস বলেন, তার বিরুদ্ধে তাবলীগ জামায়াত বিরোধীসহ নানা অভিযোগের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।