ঢাকারবিবার , ২৮ জুন ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চাউল কান্ডে প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে বাচ্চু জড়িত থাকার জবানবন্দি দিলো সকল আসামী। আটকের দাবি

Tito
জুন ২৮, ২০২০ ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিনিধি।।
মণিরামপুরে আলোচিত চাউল চুরির ঘটনায় আটককৃত তিন আসামীর জবানবন্দীতে উপজেলা যুবলীগ আহ্বায়ক ও পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্ত্তী বাচ্চুর নাম রেকর্ড করলেও এখনও পর্যন্ত তাকে আটক বা দলীয় ভাবে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। আটক আসামীদের স্বীকারোক্তিমুলক জবান বন্দী মোতাবেক চাউল পাচার কান্ডের মুল হোতা ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের ভাগ্নে উত্তম চক্রবর্ত্তী বাচ্চুকে আসামী করলে তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
জানা যায়, মণিরামপুর থানা পুলিশের একটি টিম ৪ এপ্রিল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পৌরশহরের বিজয়রামপুরে ভাই ভাই রাইস মিল এন্ড চাতালে অভিযান চালায়। এসময় উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফীর উপস্থিতিতে সরকারি কাবিখার ৫৪৯ বস্তা চাউল জব্দ করা হয়। আটক করা হয় চাতাল মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ট্রাক চালক ফরিদ হাওলাদারকে। অবশ্য সেখানে চাতাল মালিক আব্দুল্লাহ আল মামুন নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ, সাংবাদিকসহ উপস্থিতিদের সামনে চাউল পাচারের ঘটনায় খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও), চাউল বেচাকেনার সিন্ডিকেটের সদস্য শহিদুল ইসলাম, অষ্টম দাস, জগদিশ দাস, দেবাশীষ দাসসহ জড়িত অনেক কুশিলবদের নাম প্রকাশ করে।
এছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে ভাগ্নে ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তি বাচ্চুর বিরুদ্ধে চাউল পাচার সিন্ডিকেট পরিচালনার অভিযোগ তোলেন। এর কয়েকদিন পর নাজমা খানমের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার পাল্টা অভিযোগ তোলেন উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু। কিন্তু পুলিশ শুধুমাত্র চাতাল মালিক মামুন এবং ট্রাকচালক ফরিদের নামে মামলা করেন।
পুলিশ ৫ এপ্রিল মামুন এবং ফরিদকে আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে। রিমান্ড শেষে ৭ এপ্রিল তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সম্পা বসুর আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক মামুন এবং ফরিদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন চাউল পাচারের সাথে আরো জড়িত ছিলেন সিন্ডিকেট নেতা শহিদুল ইসলাম, জগদিশ দাসসহ আরো দুজন সরকারি কর্মকর্তা। মণিরামপুর থানার ওসি (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান জানান, মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য ২১ এপ্রিল যশোর ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অপরদিকে সরকারি চাল আটক হবার পর পরই সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা মনিরুজ্জামান মুন্নাকে খুলনায় বদলি করা হয়।
মামুনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক চাউল পাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ মে রাতে ডিবি পুলিশের একটি টিম পৌরশহর থেকে সিন্ডিকেট নেতা শহিদুল ইসলামকে আটক করে। পরে শহিদুল ইসলাম আদালতে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, সরকারি চাউল পাচারের ঘটনায় তার সাথে জড়িত ছিলেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তি বাচ্চু এবং পাতন-জুড়ানপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যুবলীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস।
এরপর শনিবার চাউল পাচার সিন্ডিকেটের প্রধান আদায়কারী জগিদশ দাসকে আটক করে যশোরের ডিবি পুলিশ। পারে বিজ্ঞ আদালতে জগদিশ দাস তার জবান বন্দিতে স্থা্নীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য´র ভাগ্নে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ আহ্বায়ক উত্তম চক্রবর্ত্তী বাচ্চুর জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। আদালত সূত্রে জানাযায়, জবান বন্দিতে জগদিশ বলেন, ৩০ মার্চ সকালে চাতাল মালিক মামুনের কাছে ১৬ মে:টন চাউল বিক্রি করেন ভাইস চেয়ারম্যান বাচ্চু। পরে তিনি মামুনের কাছ থেকে ৪ লাখ আশি হাজার টাকা নিয়ে আসেন।
এদিকে আকটকৃত আসামীদের স্বীকারোক্তির পরও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য´র ভাগ্নে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ আহ্বায়ক উত্তম চক্রবর্ত্তী বাচ্চুকে আটক না করতে পারায় সাধারনের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অবিলম্বে তাকে আটক এবং তার বিরুদ্ধে দলীয় ভাবে ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী তুলেছেন স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।