ঢাকাশনিবার , ১১ জুলাই ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে শিক্ষক আকরামের ‘গ্রামীণ ষাঁড়’ দাম হাকিয়েছেন ১০ লাখ টাকা

Tito
জুলাই ১১, ২০২০ ৫:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মণিরামপুর প্রতিনিধি।।
মণিরামপুর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের শিক্ষক আকরাম হোসেনের নিজ বাড়িতে পারিবারিক খামারে পালিত ‘গ্রামীণ ষাঁড়’ নামের এঁড়ে গরুটি আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে বিক্রির জন্য দাম হাকিয়েছেন ১০ লাখ টাকা। প্রায় ১ টন ওজনের এ গরুটি তার খামারের গাভীর দেওয়া বাচুর বলে দাবি করে বলেন, মাত্র তিন বছর ধরে তিনি তার নিজ খামারে এটি লালন পালন করছেন। ঢাকার এক ক্রেতা ৭ লাখ টাকা দাম হাকালেও তিনি এটি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করার আশা করছেন। তিনি এবং স্থানীয়রা দাবি করেন, তাদের গ্রাম ও আশপাশে এতো বড় গরু এর আগে কখনও দেখেননি।
খামারি আকরাম হোসেন উপজেলার কাশিপুর গ্রামের সরদার পাড়ার এরশাদ আলীর পুত্র। তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি নিজ বাড়ীতে নিজস্ব অর্থায়নে নাজিবুল দুগ্ধ খামার নামে একটি ডেইরি খামার গড়ে তুলেছেন। এই খামারে বর্তমানে ‘গ্রামীণ ষাঁড়’ নামের একটি ফ্রিজিয়ান জাতের এঁড়ে গরু, তিনটি দুধের গাভী ও দুইটি বাচুর রয়েছে। দুইটি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী থেকে প্রতিদিন ৩০ কেজি দুধ আহরন করে ৩০ টাকা হারে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি করে বেশ লাভের মুখ তিনি দেখছেন। পাশাপাশি ‘গ্রামীণ ষাঁড়’ নামের এঁড়ে গরুটি তিনি পালন করে মোটা অংকের টাকা বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন। খামারের গরুর খাবার জোগান দিতে তিনি দেড় বিঘা জমিতে ঘাস লাগিয়েছেন। নিন্মবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া আকরাম হোসেন স্বল্প বেতনে একটি মাদরাসায় চাকুরি করেন। তাই সংসারের স্বচ্ছলতার মুখ দেখতে তিনি তিল তিল করে অর্থ জোগাড় করে গড়ে তুলেছেন নিজ বাড়ীর আঙিনায় ডেইরি ফার্ম। প্রতিনিয়িত তার ধ্যান জ্ঞান এই ফার্মকে ঘিরে। শনিবার (১১ জুলাই) সকালে উপজেলার কাশিপুর গ্রামে খামারি আকরামের বাড়ীতে যেয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি মাঠে গেছেন গরুর জন্য ঘাস কাটতে। কিছু সময় অপেক্ষার পর মাথায় ঘাস বোঝায় করে বাড়ীতে আসেন খামারী আকরাম। কথা হয় তার সাথে। এক পর্যায়ে তিনি তার খামার দেখানোর জন্য নিয়ে যান তার অনেক পরিশ্রমের ও আদরের সেই গ্রামীন ষাঁড়টি রাখার ঘরে। ১০ফুট প্রস্থ ও ১৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি পৃথক ঘরের খামারে রাখা হয়েছে ষাঁড়টিকে। বিশাল দেহের এই গরুটির দৈর্ঘ্য ও উচ্চতায় ঘরটি প্রায় পূর্ণ হতে চলেছে। সরেজমিন অনুমান সাপেক্ষে গরুটি ১২ফুট দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হবে। কি কি খাবার খাওয়ানো হয় জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রতিদিন খৈল, গম ও ছোলার ভুসি, কুড়া সবমিলে ৩০ কেজি, কাঁচা ঘাস ও খড়-বিচালী ৪০ কেজিসহ প্রতিদিন প্রায় ৫’শ টাকার খাবার এখন ষাঁঢ়টিকে খাওয়ানো হচ্ছে। ষাঁড়টির ওজন কত হবে জানতে চাইলে, খামারী আকরাম জানান, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা সরেজমিন এসে মেজারমেন্ট করে এটি এক টনের বেশী ওজন হবে বলে জানিয়েছেন। কত দামে এটি বিক্রি করা হবে জানতে চাইলে তিনি জানান, মহামারী করোনার কারণে এবার দামটা একটু কম। ঢাকার এক ক্রেতা ৭ লাখ টাকা দাম দিতে চেয়েছেন। তিনি ১০ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন বলে জানান। এবারের কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে আকরামের গ্রামীণ ষাঁড়টি স্থানীয়ভাবে বেশ সাড়া ফেলেছেন বলে স্থানীয়দের মন্তব্য থেকে জানা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা রওশন আলী, লুৎফর রহমান, আব্দুল গফুর বলেন, এতো বড় গরু এর আগে তাদের এলকায় দ্বিতীয়টি তারা দেখেন নাই । মাত্র তিন বছর বয়সে এতো বড় হয়েছে, আরও বছর খানেক রাখতে পারলে গরুটির ওজন ৫০ মন ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা মন্তব্য করেন। প্রতিদিন শত শত উৎসুক দর্শক গরুটি দেখতে আসছেন বলে এলাকাবাসী জানান। এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ড. আবুজার সিদ্দিকীর সাথে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষক আকরামের বাড়ীর ডেইরি খামারে অতিসম্প্রতি তিনি পরিদর্শনে এসেছিলেন। বাড়ীর গাভীর বাচুর তিন বছর প্রতিপালন করে শিক্ষক আকরাম হোসেন যে গরুটি তার খামারে মোটাতাজা করেছেন তা সত্যিই কল্পনাতীত। এটির ওজন প্রায় এক টনের বেশী হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি আরও বলেন, উপজেলার হুরেরগাতী গ্রামের আসমত আলীর খামারের বড় গরুটি তিনি দেখেছেন। সেটির ওজন ৩২ মন হবে বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, সেই হিসেবে শিক্ষক আকরামের গরুটি উপজেলার মধ্যে দ্বিতীয় বড় গরু হবে তাতে সন্দেহ নাই।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।