মণিরামপুরে প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আইনশৃংখলা কমিটির সভায় হট্টগোল

শাহ্ জালাল।।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আইডিতে জনপ্রতিনিধিদের ইঙ্গিত করে কটাক্ষমূলক একটি ষ্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে বুধবার যশোরের মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের উপস্থিতিতে কতিপয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের মধ্যে প্রচন্ড বাকবিতন্ডা, হৈচৈ, হট্ট্রোগোল এবং একে অপরের বিরুদ্ধে ধেয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অবশ্য নাজমা খানমের দাবি কতিপয় ইউপি চেয়ারম্যান হাত উচিয়ে তার দিকে তেড়ে আসেন। এছাড়াও অভিযোগ করা হয়েছে প্রতিমন্ত্রীর পিএস কবির হোসেন উপজেলা চেয়ারম্যানের পিএস নয়নকে মারপিটের পর আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা থেকে বের করে দেয়। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অপর পক্ষ।
জানাযায়, নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রথম আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় বুধবার সকালে পরিষদের মিলনায়তনে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইনশৃঙ্খলা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি। উপদেষ্টা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পৌর মেয়র অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান, সাধারন সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন, থানার ওসি রফিকুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তি বাচ্চু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জলি আকতার, প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোতাহার হোসেন, সকল ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যরা।
সভায় প্রথমে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম উত্থাপন করেন মঙ্গলবার রাতে পৌরশহরের চার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি সংগঠিত হওয়ার বিষয়টি। বার বার চুরি সংগঠিত হলেও প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় প্রতিমন্ত্রীসহ উপস্থিত সকলই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পরবর্তিতে ঝাপা ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক মন্টু সভায় অভিযোগ করেন ১৭ জুলাই উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের ছেলে আসিফ খান অভি তার ফেসবুক আইডিতে জনপ্রতিনিধিদের কটাক্ষ করে একটি ষ্ট্যাটাস দেন। এ অভিযোগ উত্থাপন করে চেয়ারম্যান মন্টু দোষি ব্যক্তির শাস্তি দাবি করেন। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান তার ছেলের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ খন্ডন করে বিভিন্ন উপমা দিতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে ভোজগাতী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক ঝাঁপার চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে নাজমা খানমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তিরষ্কার করেন। নাজমা খানম এ সময় উত্তেজিত হয়ে পাল্টা আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন। এ সময় বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের পক্ষে অবস্থান নেন। ফলে সভাকক্ষে বাকবিতন্ডাসহ প্রচন্ড হট্টোগোল শুরু হয়। এক পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম সভা ত্যাগ করে চলে যান। নাজমা খানমের অভিযোগ পরিকল্পীতভাবে ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক মন্টু এবং ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক গালিগালাজসহ হাত উচু করে তার দিকে তেড়ে আসেন। এ সময় অবশ্য উপস্থিতিরা তাদেরকে ঠেকিয়ে দেন। অন্যদিকে গালিগালাজের অভিযোগ অস্বীকার করে আবদুর রাজ্জাক জানান, বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে তার কাববিতন্ডা হয়েছে।
অপরদিকে নাজমা খানম আরো অভিযোগ করেন সভাকক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রীর পিএস কবির খান তার পিএস নয়নকে মারপিট করে বের করে দিয়েছে। এ ঘটনায় তিনি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
তবে মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে কবির খান জানান, আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের পিএস নয়ন নামে কেউ আছে কিনা জানিনা বা চিনিনা, আর মারার প্রশ্নতো পরের কথা।
আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এব্যাপারে কিছু জানা নেই, মামলা হয়েছে কি-না থানায় খোঁজ নিলে জানতে পারবেন।