ঢাকামঙ্গলবার , ২৮ জুলাই ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে ধর্ষণের দ্বায় থেকে বাঁচতে দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে বিয়ে করলেন শিক্ষক

Tito
জুলাই ২৮, ২০২০ ৫:৪৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রিপন হোসেন সাজু, মণিরামপুর থেকে।।
মণিরামপুুরে মাদ্রাসার নাইট কোচিংয়ে লোমহর্ষক ভাবে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণকারী বহুল আলোচিত শিক্ষক তরিকুল ইসলাম জামিনে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচার জন্য অর্থের লোভ দেখানোসহ কৌশল খাঁটিয়ে সেই ধর্ষিতা শিক্ষার্থকে বাল্যবিয়ে করে আরেকটি অপরাধের জন্ম দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক তরিকুলের স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্তেও ঘটনার প্রায় ১০ মাস পর ১৫ বছরের ধর্ষিতা শিক্ষার্থীর বয়স সাড়ে ২০ বছর বানিয়ে বিয়ে করায় এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যের পাশাপাশি সমালোচনার ঝঁড় উঠেছে। চলতি মাসের ২৪ জুলাই ধর্ষক তরিকুল কর্তৃক দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পৌর নিকাহ রেজিষ্ট্রি কাজী মাহাবুবুর রহমান। আইন বিশ্লেষকদের মতে, ধর্ষিতাকে বিয়ে করলেও ভিকটিম ও স্বাক্ষীদের জবানবন্দি এবং ধর্ষিতার ডাক্তারী পরীক্ষা রিপোর্টে আইন অনুযায়ী ধর্ষকের জেল-জরিমানা হতে পারে।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ রয়েছে, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর উপজেলার ঝাঁপা দক্ষিণ পাড়া দাখিল মাদ্রাসার মধ্যে সহকারী শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম মেয়েদের নাইট কোচিং পড়াচ্ছিলেন। ঘটনার সময় টিপ টিপ করে বৃষ্টি হওয়ার সুযোগে মাদ্রাসারর পাশ্ববর্তী এলাকার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে শিক্ষক নজরুলের সহযোগীতায় ডেকে নিয়ে মাদ্রাসার বাথরুমের পাশে মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে শিক্ষক তরিকুল। এক পর্যায় জ্ঞান হারিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলে ফেলে রাখা হয় ওই শিক্ষার্থীকে। বৃষ্টি থেমে গেলে রাত ৮টার দিকে অন্য মেয়েদের ছুটি দিয়ে শিক্ষক তরিকুল ও নজরুল মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে যান। অন্য মেয়েরা বাড়িতে ফিরলেও ওই শিক্ষার্থী বাড়ী না ফেরায় তার অভিভাবকরা মাদ্রাসায় খুঁজতে আসে। এসময় অজ্ঞান হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক পর্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকসহ এলাকাবাসী মাদ্রাসা ঘেরাও করে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ অন্যান্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে ওই রাতেই জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর ওই শিক্ষার্থীর পরিবার ধর্ষক তরিকুল ও নজরুলকে আসামী করে মণিরামপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এদিকে শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর ধারাবাহিক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের বিষয়টি মাথায় নিয়ে ধর্ষক তরিকুল ও নজরুলকে পুলিশ গ্রেফতার করে। জানাযায়, ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীর প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাকে প্রায় একমাস হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা খানপুর এলাকার মোন্তাজ আলীর পুত্র ধর্ষক তরিকুলের স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীসহ নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলা থেকে বাঁচার জন্য বাদী পরিবারকে অর্থের লোভ দেখানোসহ কৌশল খাটিয়ে ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ে করেছে তরিকুল। উক্ত বিয়ে আইনসম্মত দেখাতে উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন কার্ডে ১৫ বছরের ধর্ষিতা দশম শ্রেণিরওই শিক্ষার্থীর বয়স সাড়ে ২০ বছর করা হয়েছে। আর প্রায় ৪০ বছরের ধর্ষক তরিকুলের বয়স বিয়ে রেজিষ্ট্রারে দেখানো হয়েছে ৩০ বছর। এদিকে শিক্ষার্থী ধর্ষণ করে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত হওয়া বহু অপকর্মের হোতা তরিকুলের এমন নতুন নাটকীয় ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যের পাশাপাশি সমালোচনার ঝঁড় উঠেছে।
বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর নিকাহ রেজিষ্ট্রি কাজী মাহাবুবুর রহমান বলেন, মেয়ের জন্মনিবন্ধন কার্ডে বয়স দেখে তিনি বিয়ে পড়িয়েছেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।