ঢাকাশনিবার , ২৪ অক্টোবর ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আসন্ন বোরো মৌসুমে ধান চাষের স্বপ্ন দেখছেন বিল কপালিয়া পাড়ের কৃষকেরা

Tito
অক্টোবর ২৪, ২০২০ ৩:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রিপন হোসেন সাজু, মণিরামপুর (যশোর)।।
যশোরের মরণ ফাঁদ ভবদহের পানিবদ্ধতায় বছরের পর বছর বিলে ধান চাষ করতে না পেরে এলাকার মানুষ এক প্রকার নিঃস্ব, অসহায়, সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন। দেয়ালে পীঠ-ঠেঁকা বিলপাড়ের মানুষ বাধ্য হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে নিজেদের অর্থে স্থাপন করেছেন উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সেচ পাম্প। যশোরের পজেলার মণিরামপুর ও অভিয়নগর জলাবদ্ধ বিল কপালিয়া পাড়ের ভূক্তভোগিরা বিল থেকে পাম্প দিয়ে পানি সরিয়ে আগামী বোরো মৌসুমে বিলের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের স্বপ্ন দেখছেন।
পাম্প চালুর ২০ দিনের মধ্যে বিল থেকে প্রায় ৮ ইঞ্চি পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হয়েছে। বিলপাড়ের মানুষ ধান চাষ করতে পারলে দুই উপজেলার ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা তাদের। এতে একদিকে বিলপাড়ের মানুষ যেমন ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন অপরদিকে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
অবশ্য পাম্প চালুর শুরুতে বিদ্যুত সংযোগে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) বেকে বসেন। পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ না দিতে যপবিস-২ তে পাউবো আপত্তি পত্র দেন। তাদের আপত্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগে বিলম্ব হয়।
পরবর্তিতে যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও যশোর-৬ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের হস্তক্ষেপে সেচপাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়। তবে আশার কথা হলো পাউবো কর্তৃপক্ষ এখন নিজেরাই ভবদহ স্লইচগেটের (২১ ও ৯ ভেন্ট)-এ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ডিজাইনের কাজ শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন যশোর পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম।
সরেজমিন ভবদহ বিলপাড়ে গেলে কার্ত্তিক মন্ডল, বিষু মন্ডল, নরেশ বিশ্বাস, মনিশান্ত মন্ডলসহ একাধিক ভূক্তভোগিদের সাথে কথা হয়। তারা জানান, বছর দু’য়েক আগেও বোরো মৌসুমে বিলের প্রায় জমিতে ধান চাষ হতো। কিন্তু বর্তমানে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারনে ধান চাষ সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিল কপালিয়া পাড়ের মণিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মশিয়ূর রহমানসহ কপালিয়া, মনোহরপুর, পাঁচাকড়ি, বালিদহ, নেহালপুর ও অভয়নগর উপজেলার কালিশাকুল গ্রামের পরিতোষ সরকার, মাষ্টার চিত্তরঞ্জন, হাফিজুর রহমান, সাইদুজ্জামান, মোজাম হোসেন ও হাফিজুর রহমান মিলে পাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নেন।
পাম্প কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মশিয়ূর রহমান জানান, সেচ পাম্প স্থাপনে গ্রামবাসীও সাড়া দেন। গ্রামবাসির সম্মিলিত অর্থে পাম্পটি স্থাপিত হয়েছে। মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার বলেন, বিলের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে (মণিরামপুর অংশে ১২শ’ হেক্টর ও অভয়নগর অংশে ৮শ’ হেক্টর) ধান চাষ হলে প্রায় ৬ হাজার ৬শ’ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হবে বলে আশা করা যায়।
এদিকে গত ১৬ অক্টোবর পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার ভবদহ এলাকায় আসলে তিনি পাম্প স্থাপনের বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি ভবদ স্লইচগেটে পাম্প স্থাপনে যাচাই-বাছাই করতে যশোর জেলা পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেন।
পাউবো’র জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প স্থাপনে ডিজাইনের কাজ শুরু হয়েছে। ভবদহ ও তৎসংলগ্ন এলাকা হতে পানি সরাতে ও আগামী বোরো মৌসুমে কৃষকরা বিলে ধান চাষ করতে পারে সেজন্য-এটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত অনুমোদনের পর কাজ শুরু হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।