শহিদুজ্জামান মিলন।।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে মনিরামপুর পূর্বাংশের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের এ্যাড.নুরুল ইসলাম। তিনি পঞ্চাশের দশকে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তারপর বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম কমিটি গঠনের নির্দেশ আসলে মনিরামপুরে এ্যাড.নুরুল ইসলামের নির্দেশনায় নজরুল ইসলামকে (হাজরাকাঠি) আহবায়ক করে পাঁচ সদস্যের সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়।অন্য সদস্যরা ছিলেন ডাঃনওশের আলী (জালঝাড়া), আনোয়ার হোসেন (হুগলা ডাঙ্গা), মাষ্টার নওশের আলী (হানুয়ার), নিছার আলী মুন্সী (কাশিপুর)।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে,সেই উত্তাল পরিস্থিতিতে তিনি ভারতে গমন করেন। ভারতের চাঁপাবাড়িয়া যুবশিবিরে উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এলাকার যুবকদের মুক্তিযুদ্ধে রিক্রুট ও তদারকি করতেন। বিভিন্ন সময় দেশে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্দেশনা দিতেন।দেশ স্বাধীনের পর তিনি গণপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন।স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় তার অবদান রয়েছে।
তাছাড়া ১৯৬৮ সালে ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সহ ৩৫ জনকে আসামি করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করা হয়।এ্যাড.নুরুল ইসলাম এই মামলার অন্যতম আইনজীবী ছিলেন। তাছাড়া তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক মনিরামপুর উপজেলার বাঙালি পুর গ্রামে ১৯২৭ সালের অক্টোবরে জন্মগ্রহণ করেন।জন্মের পূর্বেই বাবাকে হারান।ছোট বেলায় সীমাহীন দারিদ্র্যতার সঙ্গে সংগ্রাম করেছেন। যশোর এম এম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ এবং বাঁকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইন শাস্ত্রে ডিগ্রী নেন।তিনি মেধাও কঠোর অধ্যবসায় দ্বারা নিজেকে অধিষ্ঠিত করেছেন অনন্ত উচ্চতায়।
তার সহধর্মিণী মরিয়ম বেগম। তিনি তিন পুত্র ও চার কন্যা সন্তানের জনক।২০০৬ সালের ৭ জুলাই মনিরামপুরের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ পরলোকগমন করেন।
তথ্য সূত্রঃ
একাত্তরের রণাঙ্গন (যশোর সাতক্ষীরা)
মুহাঃ আবুল কালাম আজাদ