ঢাকাশুক্রবার , ১০ এপ্রিল ২০১৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে সোলার বিতরনের নামে সরকারীভাবে বরাদ্দ থেকে লাগামহীন হরিলুটের অভিযোগ

admin
এপ্রিল ১০, ২০১৫ ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মোস্তফা! পেশায় একজন দিনমজুরে। লেখাপড়া আদৌ জানেন না। হত দরিদ্র এই মোস্তফার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংয়োগ নেই। তাই সরকারীভাবে ৫০ ইউনিটের (পাওয়ার) একটি সোলার প্যানেল পেয়েছেন। এতেই খুশি সে। কিন্তু এ সোলার প্যানেল নিতে নগদে ২ হাজার টাকাও দিতে হয়েছে। মণিরামপুরের পাতন গ্রামের সবেদ আলী মোড়লের ছেলে মোস্তফা। এ গ্রামে কেবল মোস্তফা নয়, দিনমজুরে মালেক, কাদের, নিজাম, মুজাম, জয়নাল, পয়মল এমনকি পাতন দাখিল মাদ্রাসায়ও একটি সোলার প্যানেল দেওয়া হয়েছে সরকারীভাবে। কিন্তু সোলার প্যানেল পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের নিকট থেকে এভাবে টাকা আদায় করা হয়েছে। যা সোলার প্যানেল নিতে একটি টাকাও নেওয়ার কোন নিয়ম নেই। খোঁজখবর নিয়ে জানাযায়, বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই এমন পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে সরকারীভাবে সোলার প্যানেল। অভিযোগ রয়েছে সোলার বিতরনের নামে সরকারীভাবে বরাদ্দ থেকে লাগামহীন হরিলুট চলছে। জানাযায়, উপজেলায় এসব সোলার SOLARপ্যানেল দিতে সম্প্রতি ৫’শ ৬ মেট্রিক টন চাল টিআর প্রকল্পের অধীনে বরাদ্দ দেয়। সরকারী প্রতি ১ টনের মূল্য নির্ধারন ৩৫ হাজার ৪’শ ৮১ টাকা। যার হিসাবে ৫০৬ টন চালের মূল্য দাড়ায় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৩ হাজার ৩৮৬ টাকা। ত্রান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় থেকে দেওয়া এ প্রকল্প ২৩/১২/১৪ তারিখে যশোর জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। বরাদ্দকৃত ৫’শ ৬ মেট্রিক টন ওই চালের বিপরীতে ১২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৩১০টি বসত বাড়িতে সোলার প্যানেল বিতরনের কার্যক্রম চলমান। অভিযোগ রয়েছে, এর সব কিছুরই তদারককারী হিসেবে দায়িত্ব হাতে নিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লুৎফর রহমান। খোজখবর নিয়ে জানাযায়, বিতরনকৃত সোলার প্যানেলগুলো খুবই নি¤œ মানের। ৫০ ইউনিটের সোলার প্যানেল বিপরীতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ মেট্রিক টন চাল। যার মূল্য ৩৫ হাজার টাকা হলেও সোলার প্যানেলটি ক্রয় করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা মূল্য দিয়ে। বাকি অর্থ কোথায় যাচ্ছে এ বিষয়ে মাথা ব্যাথা নেই কারোরই। ইউনিয়ন ভিত্তিক জন প্রতিনিধি এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লুৎফর রহমান এর সব কিছুই। এ ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার আশির্বাদ হিসেবে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ নজরুল ইসলাম। সরকারী এসব অর্থ নিয়ে যে হরিলুট হয়ে চলেছে তা আদৌ নির্বাহী কর্মকর্তা খোজখবর রাখেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কোন কোন সোলারের প্যানেলের বিপরীতে ৪ মেট্রিক টন এবং ৩ মেট্রিক টনও বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু কোন পরিবারই পাচ্ছেন না ৫০ ইউনিটের অতিরিক্ত সোলার প্যানেল। এছাড়া বরাদ্দ পাওয়া ওই পরিবারকেও জানার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের এমএলএসএস মিজানুর রহমান মাঠ পর্যায় দেখভাল করে যাচ্ছে এ সব প্রকল্পের কাজ। অফিস কর্মকর্তার বিশ্বাসভাজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী এই মিজান। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, নামী-দামি কোম্পানির নাম ব্যবহৃত যেসমস্ত সোলার প্যানেল দেওয়া হচ্ছে তা যশোর পাল বাড়ি এলাকার জনৈক মিলনের কাছ থেকে নাম মাত্র মূল্য দিয়ে ক্রয় করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, কারিগর এই মিলন বাড়িতেই যত্রতত্রভাবে বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যবহার করে এই সোলার প্যানেলগুলো তৈরী করে সরবরাহ করছেন মণিরামপুরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লুৎফর রহমানের মাধ্যমে। প্রকল্প নিয়ে দূর্নীতির মচ্ছপ এখানেই শেষ নয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ১৭/০৯/১৪ তারিখে, ৩৫১ স্মারকে টিআর বিশেষ প্রথম পর্যায়ে ৩’শ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয় এ উপজেলার উন্নয়ন কাজে। যা ১২০ টি প্রকল্পের বিপরীতে কাজ সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তব ক্ষেত্রে তদন্ত করলে হতাশ হবেন তদন্তকারীরা। এছাড়াও কাবিখা বিশেষ প্রথম পর্যায় দেওয়া হয় ৩’শ মেট্রিক টন চাল। ৩৭৩/১৪ স্মারক নং পত্রে একই মন্ত্রনালয় থেকে একই সময় ছাড় করানো হয়। যা ২৫ টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দকৃত এ চাল কাজ করনে সম্পন্ন দেখানো হয়েছে । এসব বিষয় নিয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লুৎফর রহমান দূর্নীতির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এক প্রশ্নে জবাবে লুৎফর রহমান জানান, টিআর বিশেষ প্রথম পর্যায়ের এবং কাবিখার প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। চলমান রয়েছে টিআর সাধারন ৫০৬ মেট্রিক টনের। তবে এ সব অভিযোগ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হস্থ.েক্ষপ কামনা করেছেন সচেতন ব্যক্তিরা।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।