ঢাকাসোমবার , ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে তিন ঘন্টার ব্যবধানে দুই শিক্ষার্থীর আত্মহনন

admin
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫ ৮:১৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

যশোরের মণিরামপুরে একই রাতে মাত্র তিন ঘন্টার ব্যবধানে দুই স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। গত রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা ও রাত সাড়ে দশটায় এঘটনা ঘটে। আত্মহত্যার শিকার দুই শিক্ষার্থীর নাম হরিচাঁদ (১৫) এবং মুসফিকা আঁখি (১৪)। হরিচাঁদ উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের পোড়াডাঙ্গা গ্রামের সুশান্ত মল্লিকের ছেলে এবং স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র। অপরদিকে আাঁখি উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নের সিরালি মদনপুরের মুস্তাফিজুর রহমান পামিরের কন্যা এবং স্থানীয় সাড়াপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী। পৃথক পৃথক আত্মহত্যার ঘটনায় মণিরামপুর থানায় দুটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। সিরালি মদনপুর গ্রামের পামিরের প্রতিবেশী মেজবাহুর রহমান জানান, মোস্তাফিজুর পামির বাড়ি থাকেন না। তার স্ত্রী রাখিয়া সুলতানা বড় মেয়ে আঁখি ও ছোট দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থাকে। রবিবার রাত ১০ টার দিকে হঠাত মোস্তফিজুরের বাড়িতে চিতকার শুনে এগিয়ে এসে দেখি আঁখি সোবার ঘরে খাটের পরে শুয়ে আছে। তার দুই হাত কব্জির নিকটে ব্লেড দিয়ে কাটা। হাত থেকে প্রচুর রক্ত খরন হচ্ছে। দ্রুত যশোরে এম্বুলেন্স খবর দিই। কিন্তু এম্বুলেন্স আসার আগেই অতিরিক্ত রক্ত খরনে তার মৃত্যু হয়।  আখির মা রাখিয়া সুলতানা জানান, রাতে একসাথে খাবার খেয়ে আখি খাটের উপরে শুয়েছে আর আমি ছেলে দু’টোকে নিয়ে নিচে শুয়ে ছিলাম। হটাত মেয়ের কাতরানোর শব্দ পেয়ে উঠে দেখি তার দুই হাত কাটা এবং হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে। তিনি জানান,আমার মেয়ে স্কুল থেকে বাড়ি এসে আমাকে বলেছে,ওইদিন ড্রেজ না পরে স্কুলে যাওয়াতে যমুনা নামের এক ম্যাডাম তাকে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে এবং ফজলু নামের এক স্যার তাকে পিটিয়েছে। তবে কেন যে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে তা বুঝে উঠতে পারছিনা। এদিকে সোমবার সরেজমিনে সাড়াপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গেলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আঁখির ঘনিষ্ট বান্ধবী নবম শ্রেণীর আকলিমা জানায়,ওই স্কুলের ১০ম শ্রেণীতে পড়–য়া আকাশ নামের এক ছেলের সাথে আঁখির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আকাশ প্রথমে আঁখিকে ভালবাসলেও পরে তাকে এড়িয়ে চলতে থাকে। গত ৪/৫ দিন ধরে আঁকাশ আখির সাথে কথা বলছে না। আঁখি ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে,কাল (সোমবার) সকালে আমাকে একটা উপহার দেবে। অথচ সকালে আকাশ আমাকে ফোন দিয়ে বলে,আঁখি মারা গেছে। এসময় আকলিমা যমুনা ম্যাডাম আঁখিকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া ও ফজলু স্যারের লাঠি দিয়ে মারার কথাটি সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছে। সাড়াপোল স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধন অধিকারী বলেন,আঁখিকে ক্লাসরুম থেকে বের করা প্রসঙ্গে আমি কিছু জানি না। অপরদিকে পোড়াডাঙ্গ এলাকার স্থানীয় গ্রাম্য পুলিশ হারান মল্লিক জানান, রবিবার স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে হরিচাঁদ বন্ধুদের সাথে বাইরে ঘুরতে যায়। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পর মা রেবা মল্লিক ছেলেকে লেখাপড়ার জন্য বকাঝকা করে। এরপর হরিচাঁদ নিজ ঘরে ঢুকে দরজা মুখোমুখি লাগিয়ে মায়ের পরে অভিমান করে আঁড়ার সাথে শাড়ি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। কিছুক্ষণ পর তার মা ডাকতে ডাকতে ঘরে গিয়ে ছেলের লাশ ঝুঁলতে দেখে। মায়ের চিতকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে ফাঁস কেটে হরিচাঁদকে নিচে নামিয়ে আনে। ততক্ষনে হরিচাঁদের মৃত্যু ঘটে। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পিতা মাতা শোকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। এঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  মণিরামপুর থানার ওসি তাহেরুল ইসলাম জানান,পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় আঁখির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর হরিচাঁদের আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।