ঢাকাসোমবার , ২৫ জানুয়ারি ২০১৬
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সাংবাদিক যখন রাজনৈতিক কর্মী । এরা “গৃহপালিত সাংবাদিক”

admin
জানুয়ারি ২৫, ২০১৬ ৩:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মনিরামপুরে একটা অভিযোগ অনেক দিন ধরে করা হচ্ছে যে, মনিরামপুরের সাংবাদিক দের একটা অংশ বড় দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত। দেশের অন্য কয়েকটি পেশা ও রাজনৈতিক ভাবে বিভক্ত । তবে অন্য পেশা রাজনৈতিক ভাবে বিভক্ত হলে ক্ষতি হয় অনেক বেশী । অনেকে এই ক্ষতি জেনে শুনে ও এসবের সঙ্গে যুক্ত হন । কারন কোন বড় দলের পক্ষে থাকতে পারলে পেশায় যেমন দ্রুত উন্নতি করা যায় তেমনি আর্থিক ভাবেও লাভবান হওয়া যায়। আজকাল বড় দুটি দলের যারাই ক্ষমতায় থাকে তাদের সমর্থক গোর্ষ্টির বাইরে কোন কিছুই তারা বিবেচনা করেন না । বাংলা দেশের সরকারী কাজের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এখন দলীয় করন প্রতিষ্টিত সত্য। এটা নিয়ে কারও কোনো লজ্জা বা দুঃখবোধ ও নেই। সেক্ষেত্রে পরশুরামের গনমাধ্যম জগতও তার বাইরে নয়।তবে এসব বিষয় এখন আলোচনা সমালোচনার উর্ধে। গনমাধ্যমের নেতারা আগে পরোক্ষ ভাবে দলবাজি করতেন কিছুটা আড়াল করতেন । নিজেদের দলীয় সমর্থক বলে পরিচয় দিতেন । অন্য দশটি পেশায় দলীয় সমর্থক পরিচয় দেওয়া দোয়ের কিছু নয় । কিন্তু সাংবাদিকতা এমন এক পেশা যেখানে সব দলও মতের প্রতি সমান গুরুত্ব দিতে হয় । এমন কি চরম সন্ত্রাসী জঙ্গি, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ও গুরুত্ব দিতে হয় শুধু  পেশাগত কারনে। তাদের বক্তব্য শুনতে হয়। অবিকৃত ভাবে প্রকাশ বা প্রচার করতে হয়। মতামত দেওয়ার সময় সাংবাদিক তার মতামত স্বাধীন ভাবে লিখতে পারেন। কোন দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব বা বিরাগ থাকলে বস্তুনিষ্ট বা সৎ সাংবাদিকতা সম্ভব নয়। হয়তো সে জন্যই সাংবাদিকতার আন্তর্জাতিক পন্ডিতেরা বলে গেছেন, “সাংবাদিকের বন্ধু থাকতে পারেনা” কথাটিকে আক্ষরিক অর্থে নিলে অযথা বির্তক হতে পারে।এখানে আসলে বলা হয়েছে,”কারও প্রতি সাংবাদিকের দূর্বলতা থাকতে পারেনা,। যদিও বাংলাদেশের বর্তমান সাংবাদিকতা সর্ম্পকে এসব নীতিকথা প্রযোজ্য নয় । সাংবাদিক সমাজ এদেশের সাংবাদিকতা পেশাকে ভিন্ন একটি রুপ দিয়েছে। যা আন্তর্জাতিক কাঠামো, চরিত্র বা নৈতিকতার সঙ্গে পুরোপুরি মেলেনা । প্রবীন সাংবাদিকদের অনেকেই বর্তমান সাংবাদিকতার অনেক নিয়ম কানুন, ভঙ্গি, আচরন মেনে নিতে পারেন না। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থেকে নানা সুবিধা নেওয়াও সেরকম একটি কাজ। বর্তমান প্রজম্মের অনেক পেশাদার সাংবাদিক ও তা মেনে নিতে পারেনা, কিন্তু তারা অসহায় । আর সুযোগ সন্ধানী সাংবাদিকরা এই পরিস্থিতি নিজেদের স্বার্থে ভালো ভাবে কাজে লাগাচ্ছেন । শোনা যায় এরকম সুযোগ সন্ধানী ও স্মাট সাংবাদিকরা অনেকেই “ম্যাডাম” অথবা “আপার” নাম ভাঙ্গিয়ে বা প্রভাব কাজে লাগিয়ে অল্প বয়সেই বড় বড় পদ বিপুল অর্থ ও সম্পদের অধিকারী হয়েছেন। এলাকার অনেক জায়গায় তাদের কথা অনেকে আলোচনা করেন। তারা খুব অচেনা নন বা তারা কিছু গোপন ও করেন না। গনমাধ্যম জগতে এগুলো এখন ওপেন সিক্রেট । তাদের সমালোচনা নয় তারা এখন সমালোচনার উর্ধে । আগে এসব দলবাজি পরোক্ষ ভঙ্গিতে ছিল,এখন তা অনেকটা প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে। তাতে এসব সাংবাদিক বিন্দু মাত্র বিব্রত নন, বরং গর্বিত ! সংবাদ পত্রের দয়িত্ব শীল পদে কাজকরে পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক দলের মিডিয়া সেলে কাজ করা কি নৈতিক ভাবে সম্ভব? এ ধরনের প্রকাশ্য রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন কি সাংবাদিকতা পেশাকে কুলুষিত করেনা ? এসব  দয়িত্ব পালন করে অভিজ্ঞ ও প্রর্বীন সাংবাদিকরা নবীন সাংবাদিকদের সমানে কী দৃষ্টান্ত রেখে যাচ্ছেন? একজন সাংবাদিক তার প্রিয় রাজনৈতিক দলকে সহায়তা করতে বা চাইতেই পারেন, তবে তা পত্রিকা বা টিভির চাকরি বা দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে করা উচিৎ। তার রাজনৈতিক দয়িত্ব যেন সাংবাদিকতার পেশাগত দায়িত্ব নিরপেক্ষ ভাবে পালনে কোন বাধা হতে না পারে। বা রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন যেন জনতার মধ্যে নিরপেক্ষতা সম্পর্কে কোন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে না পারে।
দুই বড় দলের সরকার ও নেতারা এর সুযোগ ভালোভাবেই গ্রহন করছে। তারা কিছু সাংবাদিক পোষেন । এদের বলা যায় “গৃহপালিত সাংবাদিক”। এরা মিডিয়ায় দল দুটির স্বার্থ রক্ষা করেন। এদের কি সাংবাদিক বলা উচিত? এরা সাংবাদিক হলে দল নিরপেক্ষ, স্বাধীন, নির্ভীক গণমাধ্যম কর্মীকে কী বলব? ওরাও সাংবাদিক ? তাহলে পার্থক্য কী হলো ? একটি গ্রুপ বড় দুটি দল থেকে নানা সুবিধা নিয়ে সাংবাদিকতা করছে, আরেকটি গ্রুপ কোন সুযোগ সুবিধার তোয়াক্কা না করে নির্ভীকভাবে কারও স্বার্থ রক্ষা না করে, বস্তনিষ্ট সাংবাদিকতা করেছে। দুই গ্রুপকে কি একই সম্মান দেওয়া যায়? দেওয়া উচিত? দলদাস সাংবাদিকদের আমরা বিভিন্ন দলের “জনসংযোগ কর্মকতা” বলতে পারি। জনসংযোগ কর্মকর্তা কেনো খারাপ পদবি নয়। এটাও একটা সম্মানীয় পেশা। সাংবাদিকতা পেশার কিছু শর্ত আছে। সাংবাদিক হতে হলে সেসব শর্ত মেনে চলতে হয়। বিষয়গুলো নিয়ে আরও ভাবা দরকার। আমাদের দূষিত রাজনীতি অনেক পেশাকে প্রায় ধ্বংস করে এনেছে। সাংবাদিকতা পেশার ব্যাপারে আমরা এখনই সচেতন না হলে এই পেশার সম্মান ও ঐতিহ্য আমরা ধরে রাখতে পারব না । ইতোমধ্যে এ পেশার একটা বড় অংশ কলুষিত হয়ে পড়েছে। সবটা রাজনৈতিক কারণে হয়নি । কিছুটা অনৈতিকতা ও দুর্নীতির কারণেও হয়েছে । এটা ও খুব উদ্বেগের বিষয় যে সাংবাদিকতার পবিত্র অঙ্গনে দুর্নীতি ক্রমে ক্রমে ঢুকে পডেছে। এটাও সংবাপত্র জগতে ওপেন সিক্রেট।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।