বিশেষ প্রতিনিধি:
মণিরামপুরের বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ী পরিমল হত্যা মামলার অন্যতম আসামী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন নয়াবাগ এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে তাকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী পরিমল হত্যা মামলার অন্যতম আসামী ও মিশনের মুল পরিকল্পনাকারী জামাল হোসেন পরিমল হত্যাকান্ডের পর থেকেই লাপাত্তা ছিলো। মুলত: জামালের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী পরিমলের কাছ থেকে টাকা ছিনতাই করার পরিকল্পনা মাফিক হামলা চালায় চক্রটি। ছিনতাইকালে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে পরিমলের বুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে চক্রের অপর সদস্য আ: কাদের। তাকে গত মঙ্গলবার আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়ে মণিরামপুর পুলিশ।
এদিকে হত্যা মিশনে অংশগ্রহনকারীদের আটকের দাবিতে স্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাধারন মানুষ একরে পর এক স্মারকলীপি, মানববন্ধন ও বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে। ফলে কিছুটা চাপে পড়ে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মণিরামপুর থানা পুলিশ, যশোরের ডিবি পুলিশ ও গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশের একটি দল যৌথ অভিযান চালিয়ে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ছাত্রবাস থেকে রাত সাড়ে চারটার দিকে তাকে আটক করে। সেখান থেকে তাকে নিয়ে ঢাকা হয়ে যশোরে আসে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যমতে অন্যান্য আসামীদের আটকের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাকে মণিরামপুর থানা হাজতে নিয়ে আসে।
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোকাররম হোসেন জানান, ব্যবসায়ী পরিমল হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও অস্ত্রবাজি করার সাথে জড়িত থাকাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে পুলিশের কাছে। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, বিগত সংসদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে তার ভাই পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আদম আলীকে পুলিশ আটক করলে তাকে মুক্তির দাবিতে থানা ঘেরাও করে গেটে অবস্থান নেন তৎকালিন এমপি সদ্য প্রয়াত এড. খান টিপু সুলতান। সেসময়ে এমপি’র বাসায় যেয়ে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে থানা গেটে অবস্থান নেওয়ার জন্য জামাল হোসেন বাধ্য করেছিলো বলে তিনি দাবি করেন। আদম আলীকে ছাড়াতে ব্যার্থ হওয়ায় নির্বাচনী চরম ইমেজ সংকটে পড়েন আওয়ামীলীগের প্রার্থী সাবেক ওই এমপি। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, জামাল হোসেন পরিমল হত্যাকান্ডের পর এলাকা থেকে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে মণিরামপুরের বিভিন্ন সন্মানিত ব্যক্তিদের নামে অপপ্রচার করতে থাকে। একাধিকবার স্থান পরিবর্তন করায় তাকে আটক করা সম্ভব হচ্ছিলনা। অবশেষে গোপালগঞ্জ থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করা হবে বলে পুলিশ জানায়।