ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৬ অক্টোবর ২০১৭
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যশোর-৫, মণিরামপুর : আ’লীগের দলীয় সমর্থন পেতে সাত নেতার দৌড়-ঝাঁপ : নৌকা পাচ্ছেন কে?

Tito
অক্টোবর ২৬, ২০১৭ ৪:২০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মনিরুজ্জামান টিটো ॥
সংসদ নির্বাচনের এখনও প্রায় বছর খানেক বাকি থাকলেও যশোর-৫, মণিরামপুর আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়-ঝাঁপ ও নেতা-কর্মীদের মাঝে আগাম নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। বিরোধীদলসহ তাদের শরীক দলগুলোর নেতাদের পাশাপাশি মনোনয়ন পেতে তৎপর হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও।
স্থানীয় একাধিক ও উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক জনবসতিপূর্ণ এ উপজেলায় সর্বশেষ হিসেবে অনুযায়ী ২ লাখ ৮৫ হাজার ৬’শ নব্বই জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার বড় অংশে রয়েছে বিশেষ একটি মহলের ভোট। সকল রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদেরই টার্গেট থাকে ওই ভোটের দিকে। তবে এক্ষেত্রে আওয়ামীলীগেরই পাল্লা ভারী থাকে বরাবরই। তবে এক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন বা প্রতীক একটি বিশেষ ভূমিকা রেখে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না বলে ধারনা করছেন বিশ্লেষকরা।
এ আসনের রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতিমধ্যে জেলা থেকে শুরু করে কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি সাধ্যমতো লবিং-গ্রুপিং চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের মাঝে এর প্রভাবটা বেশী লক্ষ্য করা গেছে। আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে মণিরামপুর আসন থেকে তিন তিনবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আলহাজ্ব এড খান টিপু সুলতানের মৃত্যুর পর মূলত: দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে নয়া মেরুকরনের সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষিয়ান রাজনৈতিক খান টিপু সুলতানের মনোনয়নের বিষয়টি প্রায় চুড়ান্ত থাকার কথা জোরেসোরে প্রচার থাকলেও তার হঠাৎ মৃত্যুতে দলীয় সমর্থন প্রত্যাশীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আওয়ামীলীগের সাত নেতা এ আসনে থেকে নৌকা প্রতীক পেতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে কেন্দ্রিয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য এড পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু, পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব কাজী মাহমুদুল হাসান, সাবেক ছাত্র নেতা ও কেন্দ্রিয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক কামরুল হাসান বারী এবং আরেক ছাত্রনেতা ও কেন্দ্রিয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক আব্দুল মজিদ রয়েছেন। মনোনয়ন যুদ্ধে আরোও রয়েছেন সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্য।
১৯৭৩ সালে জাতীয় নির্বাচনে মণিরামপুর-কেশবপুর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্টভাজন বর্তমান কেন্দ্রিয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য। বিগত কয়েকবার মনোনয়ন না চাইলেও এবারে আর ছাড় দিচ্ছেন না বলে ব্যপক প্রচার পাচ্ছে। এদিকে কেন্দ্রিয় সর্বোচ্চ পর্যায়ের লবিং থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত তিনি উপজেলাব্যাপী সরকারী ও দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহনের মাধ্যমে নিজেকে জনগণের কাছে পৌঁছে নিতে সক্ষম হয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব কাজী মাহমুদুল হাসান। ওয়ান ইলিভেনের আগে তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেলেও নির্বাচন বাতিল হলে পরবর্তীতে তা বাগিয়ে নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত এড খান টিপু সুলতান। বসে নেই সাবেক দুই ছাত্রনেতা কামরুল হাসান বারী ও আব্দুল মজিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা বর্তমান কেন্দ্রিয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক কামরুল হাসান বারী দলীয় সমর্থন পেতে কেন্দ্রিয় লবিং এর পাশাপাশি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সম্প্রতি বন্যার্তদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেও দেখা গেছে তাকে। অপর সহ-সম্পাদক আব্দুল মজিদও রয়েছেন এ দৌড়ে। অপরদিকে নিজের হারানো অবস্থান ফিরিয়ে আনতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্য। যশোর জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ থাকাকালীন মণিরামপুর আসনের দলীয় মনোনীত প্রার্থী এড খান টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহন করায় নিজ দলের কাছে বেশ চাপে পড়ে যান তিনি। বাদ পড়েন সর্বশেষ জেলা কমিটি থেকে। তবে সম্প্রতি দলীয় হাইকমান্ড স্থানীয় নেতাদের নিয়ে কোন্দল নিরসনে ডাকা একসভায় সংসদ সদস্যসহ সবাইকে এক সাথে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেন। এর পর থেকে অনেকটা হালে পানি পেয়েছেন তিনি।
তবে দৌড়-ঝাঁপ, সভা-সমাবেশ আর গেট, ব্যানার, ফেস্টুনসহ বহর প্রদর্শণ যে যাই করুক মুলত: নেতা-কর্মীরা চেয়ে আছেন প্রতীকের দিকে। যে নেতা নৌকা প্রতীক নিয়ে হাজির হবেন তাকেই সমর্থন জানাবেন তারা। যারা মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হবেন তারাও দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে প্রতীকের প্রতি সমর্থন জানাবেন এটাই প্রত্যাশা করেন নেতা-কর্মীরা।

(পৱবৰ্তী পোস্টে থাকবে বিৱোধী জোট)

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।