ঢাকাশুক্রবার , ২০ মার্চ ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া সংক্রামক করোনার প্রভাব পড়েনি গার্মেন্টস পোশাক শিল্পে

Tito
মার্চ ২০, ২০২০ ৩:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সিদ্দিক আহমদ আতিক, ঢাকা থেকে।।
প্রতিদিন চট্টগ্রামের পোশাক শিল্পে ৫০০ গার্মেন্টসে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলার প্রায় ৮ লাখ শ্রমিক কর্মরত থাকলেও গার্মেন্টস মালিকদের কোন প্রতিক্রিয়া তেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া সংক্রামক করোনা ভাইরাস নিয়ে। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১০ জন মানুষ এক জাগায় জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, পাশাপাশি সরকারের ও নির্দেশ সভা সমাবেশ জমায়েত, স্কুল, কলেজ, যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা, মাইকিং, সেখানে গার্মেন্টস মালিকরা কোন যুক্তিতে দাবী করে যে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ শ্রমিক এক জাগায় একই ফ্লোরে এক সাথে পাশাপাশি কাজ করলে শ্রমিকরা নিরাপদে থাকবে।অথচ কোথায় মসজিদের পরিবেশ, স্কুল, কলেজ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ আর অন্যদিকে গার্মেন্টসে নানান রকমের মিশিং, নানা জাতের ফেব্রিকস, হরেক রকমের ক্ষতিকর কেমিক্যাল নিত্যকার ব্যবহৃত সামগ্রী ও পন্য
এক কথায় সচেতন মহলের দাবী সবচেয়ে ভাইরাস ঝুঁকিতে গার্মেন্টস, এপারেলস শিল্প খারকানা এতদসত্তেও কিভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ, সরকারের নির্দেশ, উপেক্ষা করে প্রশাসনের নাকের ডগায় চট্টগ্রামের গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে একই কি করে প্রতিষ্ঠান খোলা রাখে।যেখানে এক ফ্লোরে কয়েক হাজার শ্রমিক একসাথে কাজ করেন। এক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন থাকা বা ভিড় এড়িয়ে চলা রীতিমতো অসাধ্য ব্যাপার। গার্মেন্টস শ্রমিকদের হাইজিন (স্বাস্থ্যবিধি) ব্যবস্থাও উন্নত নয়। এখান থেকেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে গণজমায়েতসহ স্কুল-কলেজ ছুটি ঘোষণা করা হলেও এখনই বন্ধ হচ্ছে না গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানগুলো। এদিকে শ্রম ও বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মতে গার্মেন্টস কর্মীদের থার্মাল স্কেনার করে ফ্যাক্টরিতে ডুকানোর কথা থাকলেও প্রয়োগ করছে না কোন প্রতিষ্ঠান তবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে গার্মেন্টসগুলো অনতিবিলম্বে বন্ধ করা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক মালিক অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব মতে, চট্টগ্রামের ৫০০ কারখানায় প্রায় ৮ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রত্যেক পোশাক কারখানায় নিয়মিত জীবাণুমুক্তকরণ স্প্রে করা হচ্ছে। এছাড়াও শ্রমিকদের বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামে প্রত্যেক গার্মেন্টসে কাজ চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। কিন্তু কোথাও কোন ধরনের উপসর্গ দেখা না গেলেও শ্রমিকরা আতংক নিয়ে কাজ করছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক ও তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক এসএম আবু তৈয়ব বলেন, ‘আমি মনে করি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা নিরাপদেই আছে। কারণ কারখানা বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকরা বাইরে ঘোরাফেরা করবে। তখন করোনাভাইরাস আরো বেশি ছড়াতে পারে। তবে আমরা কারখানায় শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য সরকারি সব নির্দেশনা মানছি।’
প্রসঙ্গত, তৈরি পোশাক কারখানায় এখন মন্দা সময় যাচ্ছে। তৈরি পোশাকের কাঁচামাল আমদানির প্রধান দেশ চীন এবং রপ্তানির প্রধান দেশ ইউরোপ, কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র— সব দেশেই করোনাভাইরাসের মহামারিতে করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে। এর মধ্যে যদি কারখানা বন্ধ করা হয় তাহলে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে পড়বে আশংকা করছেন তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকরা।
ঢাকায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসের রোগী ধরা পড়লেও তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি এখনও হয়নি।’
কভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারি রূপ নেওয়ায় দেশের শ্রমঘন শিল্প তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ করা হবে কি-না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনও সে রকম কোনো সমস্যা হয়নি যে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে হবে। প্রতিটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে একটা অ্যাওয়ারনেস বিল্ডআপ করা হয়েছে। অধিকাংশ ফ্যাক্টরিতে মাস্ক ও হাত ধোয়ার জন্য সাবান দেওয়া হয়েছে। সচেতনও করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সাবেক সহসভাপতি নাছির উদ্দিন বলেন, ‘গার্মেন্টস ওয়ার্কারদের সচেতন করার জন্য সব ধরনের প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এমনিতে সব গার্মেন্টসেই ডাক্তার ও নার্স আছে। শ্রমিকরা নিয়মিত চেকআপের মধ্যেই আছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন গার্মেন্টস বন্ধ করা হলে দেশের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। বিদেশের অর্ডার বন্ধ হয়ে যাবে। আবার পূর্বের অর্ডারগুলোও শিপমেন্ট হবে না। এতে মারাত্মক ক্ষতি দেশেরই হবে। তার চেয়ে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি আরো পর্যবেক্ষণ করে যদি আরও খারাপের দিকে যায় তখন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তবে এখন না। ‘বিজিএমইএর পরিচালক মোহাম্মদ আতিক চট্টগ্রাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘পোশাকশিল্পের কারখানায় শ্রমিকরা তাদের বাসার পরিবেশ থেকে ভালো আছে। কারণ কারখানাগুলো স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কারখানা বন্ধ করলে শ্রমিকরা বাসায় থাকবে, হয়ত কিন্তু সেখানে সুরক্ষিত থাকবে না। শুরুর দিকে আমরা কাঁচামাল আমদানিতেব সংকটে ছিলাম। এখন রপ্তানিতে সংকটে পড়েছি। কারণ যে দেশগুলোতে রপ্তানি হয় সে দেশগুলোতে যোগাযোগ বন্ধ হচ্ছে করোনাভাইরাসের কারণে। এরপরও আমাদের বিশ্বাস, বৈশ্বিক পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে।’
উল্লেখ্য, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে শ্রমঘন শিল্পখাতের মালিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বিশেষত, তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত ও প্লাস্টিকপণ্য শ্রমঘন শিল্পখাতের সব কর্মীকে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে পরীক্ষার পর কারখানায় ঢোকাতে বলা হয়েছে। কারও মধ্যে উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই কর্মীকে বাধ্যতামূলক ছুটি দিতে বলা হয়েছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম-মহাপরিদর্শক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে এ বিষয়ক ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যাপারে অতিদ্রুত সরকার,প্রশাসন, ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন দেশের আপামর জনসাধারণ।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।