ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৬ এপ্রিল ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

একদিকে করোনা আতংক, অন্যদিকে ধানে ব্লাস্ট রোগ : হতাশাগ্রস্থ মণিরামপুরের চাষীরা

Tito
এপ্রিল ১৬, ২০২০ ৯:২৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

তাজাম্মূল হুসাইন, মণিরামপুর থেকে ॥
সপ্তাহ পেরুলেই ঘরে উঠবে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। এরই মধ্যে যশোরের মণিরামপুরো অধিকাংশ চাষির মুখের হাসি মলিন হতে শুরু করেছে, উঠছে মাথায় হাত। শতশত জমির বোরো ধান ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে। কীটনাশকের দোকানে ছুটেও মুক্তি পাচ্ছেন না কৃষক। ফলে হতাশায় ভুগছেন তারা।্ একদিকে করোনা আতঙ্ক ,অন্যদিকে ধানের রোগ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কোদলাপাড়া, রঘুনাথপুর, মাহমুদকাটি ও টেংরামারী, দোঁদাড়িয়া, হানুয়ার ডায়ের বিল, ঝোঁকা, দীঘিরপাড়, কোমলপুর,খানপুর ইউনিয়নের ভরতপুর মাঠের অধিকাংশ জমির ধান গিট ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে। সাথে রয়েছে মাজরা পোকার আক্রমণ। ধানগাছের মাঝামাঝি স্থান থেকে শীষ পর্যন্ত শুকিয়ে যাচ্ছে। দূর থেকে দেখলে মনে হচ্ছে ধান পেকে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে চাষিরা কীটনাশক স্প্রে করেও ফল পাচ্ছেন না।
উপজেলার কোদলাপাড়া গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার বর্গা নেওয়া এক বিঘা জমিতে ব্রি-৮১ ধান লাগিয়েছি। ধানের কেবল শীষ বেরিয়েছে। তারমধ্যি বেশিরভাগ শীষের গোড়া ফুটো করে দিচ্ছে পোকা। দেখলে মনে হচ্ছে ধান পেকে গেছে। স্প্রে করিছি; কাজ হচ্ছে না। এই মাঠের রাজআলী, শেরআলী, রেজাউল, আমিনুল ইসলামসহ অনেকের ধান নষ্ট হচ্ছে।
একই গ্রামের চাষি নিজামউদ্দিন বলেন, আমাদের মাঠে ধানের রোগ মহামারি আকারে ধারণ করেছে। ১০ দিন ধরে আমার ছয় বিঘা জমির ধান ব্লাস্ট ও মাজরা পোকায় আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে দেড়বিঘা জমির অবস্থা খুব খারাপ। যেটা পাকারমত হচ্ছে, সেটা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া আশপাশের প্রায় ৪০-৫০ বিঘা জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে।
কোদলাপাড়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের অভিযোগ, ধানের রোগ নিয়ে হতাশায় ভুগলেও এই পর্যন্ত কোন কৃষি কর্মকর্তা তাদের খোঁজ নেননি।
ভরতপুর গ্রামের ধান চাষি দিলীপ কুমার পাল বলেন, আমার ১৫ কাঠা জমির ধান শেষ হয়ে গেছে। জমিতে গেলে কান্না আসে। এই মাঠের সুকুমার ,সুদীপ্ত পাল ,জাকির হোসেন,আবু তালেবসহ অধিকাংশ চাষির ধান ব্লাষ্ট রোগে শেষ হয়ে গেছে।
টেংরামারী বিলের চাষি ইসমাইল হোসেন বলেন, বিলে প্রথম ফারুক নামে এক কৃষকরে ৪০ শতক জমি আক্রান্ত হয়। সেখান থেকে পুরো মাঠে ছড়িয়ে পড়েছে। আমার নিজের ৫০ শতক জমির ধান চারদিন ধরে আক্রান্ত হয়েছে। ওষুধে কাজ হচ্ছে না। কৃষি অফিসার আমাদের খোঁজও নেননি। আমি এই এলাকার দায়িত্বে কে আছেন তার নামও কোনদিন শুনিনি।
রঘুনাথপুর শেখপাড়া মাঠের চাষি নাজিম উদ্দিন বলেন, ৪-৫ দিন আগে হালকা ঝড় হয়েছে। তারপর আমার একবিঘা জমি আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া মাঠের অনেক জমির ধান ব্লাস্টে আক্রান্ত হয়েছে।
খেদাপাড়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, কিছু জমির বোরো ধানে ব্লাস্ট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে কুয়াশা পড়লে এই সমস্যাটা বেশি হয়। আমরা কৃষকদের ট্রুপার স্প্রে করতে বলছি। এখন আর সমস্যা নেই।
মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৮ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। মাসখানেক আগে কয়েকবিঘা জমিতে লিপ ব্লাস্ট দেখা দিয়েছিল। স্প্রে করার পর সেটা নিয়ন্ত্রন হয়েছিল। ।কিছু কিছু জমিতে ব্লাষ্টে আক্রান্ত হয়েছে।।তাছাড়া আবহাওয়াজনিত বিশেষ করে কুয়াশার কারনেও ধানের ক্ষতি হচ্ছে।সরেজমিন মাঠ পরিদর্শন করে এবং চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।