ঢাকাসোমবার , ১৮ মে ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মনিরামপুরের এক করোনা যোদ্ধা মানবিক তরুণীর নাম সানজিদা জেরিন

Tito
মে ১৮, ২০২০ ৩:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ শাহ্ জালাল।।
বহুদিন ধরে পত্রিকার পাতার শুধু মনিরামপুরের সমালোচনাই শুনে আসছি আমরা। একের পর এক আলোচনায় যখন সমালোচনার ঝড় বইছে, তখন জেরিনদের মতো আলোকিত মানুষ আলোচনায় আসতে দেরি হবে এটাই সাভাবিক। আমরা পাবলিকও আলোচনার চেয়ে সমালোচনার গল্প বেশি পছন্দ করি। তবে আজ একটু ব্যতিক্রম গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি প্রিয় পাঠক। জনসেবা করতে হলে যে কোন পদ পদবী লাগেনা, জেরিনই তার উত্তম দৃষ্টান্ত।
আজ বলছি মনিরামপুর উপজেলার প্রত্যান্ত গ্রাম মাঝিয়ালী’র মোঃ নজরুল ইসলাম ও শামীন আরা বেগমের মেয়ে সানজিদা জেরিন। যার জন্ম ১৯৯৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে জেরিন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর কথা।
বিশ্বে যখন কোভিড-১৯ করোনা ভীতিতে টালমাটাল তখন সকল ভীতিকে জয় করে জেরিন তার নিজ উপজেলার গ্রাম গুলোতে ঘুরে ঘুরে কয়েক হাজার আসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন। ঝড়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে গভীর রাত অবধী তিনি কখনো বাবা, কখনো বন্ধুকে সাথে নিয়ে আবার কখনো একা একা চালিয়ে যাচ্ছেন তার কাজ।
শুধু ত্রাণ দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি তিনি, কাধে জীবানু নাশক স্প্রে তুলে নিয়ে বাজারে বাজারে ছিটিয়েছেন জীবানু নাশক স্প্রে। দিয়েছেন নিজের হাতে রান্না করে ইফতারও। নিজের ক্ষেত ও আশ পাশের ফসলের ক্ষেত থেকে সবজি কিনে দিয়েছেন গরীব অসহায় মানুষের হাতে। আর চাল, ডাল আলু, সাবান ইত্যাদি নিয়ে ছুটছেন দিনরাত।
এ বিষয়ে সানজিদা জেরিন সাথে মুঠোফোন কথা হলে জেরিন বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন “শেখ হাসিনা” আপার নির্দেশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের যুগান্তকারী পদক্ষেপ ও দিক নির্দেশনায় আমি গত ১৬ই মার্চ ঢাকা থেকে যশোরে এসে ১৭ই মার্চ থেকে আজ অবধী গরীব, অসহায়, কর্মহীনদের পাশে আছি। ১৮ই মার্চ আমি ৭শত মাক্স বিলি করি, এর পর প্রায় ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের হাতে তুলে দিতে পেরেছি করেকদিনের খাবার। ২৭শে এপ্রিল আমি বাজারে বাজোরে ঘুরে জীবানু নাশক স্প্রে করি। বাবার ১ মাসের বেতনের টাকা, পলাশ কাকা, দুটি বোন আর আমার টিউশনের টাকা দিয়ে আমি অসহায় মানুষে পাশে আছি এবং আমি আমার এই কাজ চালিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ ।
তিনি আরো বলেন, আমরা সবাই যার যার জায়গা থেকে অসহায়দের পাশে দাড়ালে তাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে। তিনি বলেন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে লকডাউন ঘোষণা না করলেও ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। রাজধানীর অসংখ্য মানুষ গ্রামে চলে গেছে। যারা আছে, তারা নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বেশ তৎপর রয়েছে। বলা যায়, দেশ এক প্রকার অবরুদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে, দিনমজুর, হতদরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষ এমনকি ভ্রাম্যমাণ ভিক্ষুক শ্রেণিও।
একদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ভয় অন্যদিকে কর্মহীন হয়ে খাদ্যাভাবে পড়ার শঙ্কায় দিন মজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষের নিদারুন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে পদিনাতিপাত করছেছে। এ পরিস্থিতি থেকে আশু মুক্তি মিলবে কি না তা তাদের অজানা। বিশেষ করে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের জীবন বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি বেশি।এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরনের জন্য যতটুকু করা যায় তাই করছি।
তিনি আরো বলেন কর্মহীন হয়ে পড়া বিশাল সংখ্যক মানুষকে যদি সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার আওতায় দ্রুত আনা না হয় তবে দেশ এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। তখন করোনা মোকাবেলায় নেওয়া পদক্ষেপও অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে। এক করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে গিয়ে আরেক মহাসংকটে পড়ার আগেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যত দেরি হবে কর্মহীন অসহায় মানুষের সংকটও তত তীব্র হয়ে উঠবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ কাজ শুধুমাত্র একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়, এটি এখন পুরো সরকারের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যক্তি পর্যায়ে, দলগতভাবে এবং কয়েকটি বেসরকারি সংস্থ্যাকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে। তবে বিচ্ছিন্ন এসব উদ্যোগের পাশাপাশি সমন্বিত উদ্যোগ সবচাইতে বেশি জরুরি। এই ব্যাপারে জন প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে হবে। অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে এলাকাভিত্তিক ত্রাণ তহবিল গঠন করতে হবে। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রেখে প্রকৃত অসহায় মানুষের সহযোগিতা করতে হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।