ঢাকাশনিবার , ৮ আগস্ট ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

টেকনাফের স্বচ্ছল পরিবারগুলো তার ছিলো টার্গেট ।। জনপ্রতি চাহিদা ছিলো ২০ থেকে ৫০ লাখ

Tito
আগস্ট ৮, ২০২০ ৭:৪৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

স্পেশাল করেসপনডেন্ট।।
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপের পুরো থানা নিয়ন্ত্রণে ছিল। চাঁদাবাজি ছিল তার নিয়মিত ঘটনা।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, টেকনাফের সচ্ছল পরিবারগুলোকে টার্গেট করতেন ওসি। বিশেষ করে উঠতি বয়সের যুবক ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ইয়াবার তকমা লাগিয়ে রাতের আঁধারে ধরে নিয়ে আসতেন। ধৃত ব্যক্তিদের নির্জন রুমে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালাতেন দিনের পর দিন। ধৃতদের মোবাইলে কথা বলিয়ে দিতেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এ ভাবেই প্রতিটি ক্রসফায়ারের আগে ভিকটিমকে ‘সেইফ’ করার কথা বলে তার পরিবার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন। ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে থাকতো তার ডিমান্ড। জান বাঁচাতে ওসির চাহিদা মতো টাকা নিয়ে আসতেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা। এতে অনেকে রক্ষা পেতেন, আবার অনেকে রক্ষা পেতেন না। এদিকে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগে গত জাতীয় নির্বাচনের আগে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের প্রত্যাহার চেয়ে কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলন করেছিলো জেলা বিএনপি। সেখানে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী অভিযোগ করেন, নির্বাচনী কাজে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ধানের শীষের কর্মীদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করছেন। এলাকা না ছাড়লে ক্রসফায়ারে দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন।
বিতর্কিত ছিল আগে থেকেই:
২০১৩ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি হরতাল চলাকালে পাঁচলাইশে থানা এলাকায় শিবিরকর্মীদের গায়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন ওসি প্রদীপ। একই বছর ২৪শে জানুয়ারি ওসি প্রদীপের একটি মামলায় রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করায় এক আইনজীবীকে লালদীঘির পাড় থেকে ধরে নিয়ে থানায় আটকে রাতভর নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের শিকার ওই আইনজীবী সুস্থ হয়ে ২৯শে জানুয়ারি আদালতে পাঁচলাইশ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০১৩ সালের ২৪শে মে পাঁচলাইশ থানার পাশের একটি কমিউনিটি সেন্টার থেকে শিবির আখ্যা দিয়ে ৪০ শিক্ষার্থীকে আটকের ঘটনায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের তোপের মুখে পড়েন ওসি প্রদীপ। ওই সময় ওসি প্রদীপের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের ব্যাপক বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা ওসিকে লাঞ্ছিত করেন। এছাড়া পাঁচলাইশে ওসি থাকাকালীন বাদুরতলা এলাকায় বোরকা পরা এক বয়োবৃদ্ধাকে রাজপথে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ব্যাপক সমালোচিত হন প্রদীপ। এ ঘটনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে টনক নড়ে। ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হয়। এক পর্যায়ে ২০১৩ সালের ২১শে আগস্ট তাকে পাঁচলাইশ থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। শুধু তাই নয়, চার বছর আগে একজন সিআইপি শিল্পপতিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তৎকালীন বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ২০১৫ সালের ১৬ই নভেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।