ঢাকাশুক্রবার , ৯ অক্টোবর ২০১৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্বর্ণের চালান খোয়া যাওয়ায় জের ধরে মণিরামপুরের যুবককে মধ্যযুগীয় নির্যাতন

admin
অক্টোবর ৯, ২০১৫ ৩:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিশাল স্বর্ণের চালান খোয়া যাওয়ার জের ধরে মণিরামপুরের জামাল হোসেন (৩০) নামের এক যুবককে সপ্তাহব্যাপী ঢাকায় একটি বদ্ধ ঘরে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জামালকে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে যশোরের একটি আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার জামাল হোসেন মণিরামপুর উপজেলার হেলাঞ্চী গ্রামের ছলেমান সরদারের পুত্র। ওই যুবকের হাত-পা বেঁধে মুখে গামচা গুঁজে সারা শরীরে সিগারেটের ছ্যাকা, ইনজেকশনের সুচ পুশসহ হকিষ্টিক দিয়ে বেদম মারপিট করেছে নির্যাতনকারীরা। জামালকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ৭ দিন ঢাকার ওই বদ্ধ ঘরে আটকে রেখে তার গ্রামের বাড়িতে ফোন করিয়ে স্বর্ণ চোরাচালাকারীদের সহযাগীদের দিয়ে ওই যুবকের অন্য ভাইদের কাছ থেকে নগদ ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ জমি কেনা-বেচার মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আরো ১১ লাখ টাকা পাবে মর্মে ষ্ট্যাম্পে ও চেকে আলাদা স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার পর জামালকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। জামাল মণিরামপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাড়িতে অসুস্থ্য অবস্থায় জীবন যাপন করছে। জামালের তার ভায়েরা ফিরে পেতে চোরাকারবারীদের সহযোগীদের কথামত কাজ করতে বাধ্য হয়েছিল বলে তারা এ প্রতিবেদককে জানায়। এ ঘটনায় জামালের বড় ভাই আব্দুল কাদের চোরাকারবারীদের সহযোগী একই গ্রামের আমির বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল আলীম জিন্নাহ, তবিবুর রহমান, আবু তাহের ও কোদলাপাড়া গ্রামের কালাম মোড়লের ছেলে শাকিল আহম্মেদের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে (আমলী) মামলা দায়ের করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার  ও পুলিশ সূত্রে জানাযায়, টাকার বিনিময়ে জামাল হোসেনকে দিয়ে একই গ্রামের তবিবুর রহমান, শাকিলসহ আরো কয়েকজন কয়েক মাস আগে থেকে ঢাকা থেকে স্বর্ণের চালান বেনাপোলের নামাজ গ্রামের আইয়ুবের কাছে পৌছে দেয়ার দায়িত্ব পালন করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের কথামতো গত মাসের ২০ অক্টোবর স্বর্ণের চালান আনতে ঢাকার তাঁতী বাজারে যায় জামাল। সেখানে লোকনাথ, ইকরাসহ কয়েকজন ব্যক্তি  জামালের দু’পায়ে ব্যান্ডেজ করে তার ভিতর প্রায় ১ কেজি ওজনের ১২ টি স্বণেৃর বিস্কুট ঢুকিয়ে দেয়। এরপর জামাল গুলিস্থান থেকে গাবথলির বাসে উঠে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর গোলাপ শাহ মাজারের কাছে আসা মাত্রই কয়েকজন অপরিচিত যুবক জামালকে ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে এনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চেক করে স্বর্ণের ব্যান্ডেল ছিনিয়ে নেয়। সাথে সাথে ছিনতাইয়ের খবরটি মালিক পক্ষের অন্যতম তবিবুর ও তাঁতী বাজারের লোক নাথকে জানানোর কিছুক্ষন পর অপরিচিত ৫/৬ জন লোক এসে জামালকে পাশের আনাম হোটেলে নিয়ে যায়। স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগ এনে সেখানে হাত-পা বেঁধে মুখে গামচা গুজে জামালকে বেদম মারপিট করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে। জ্ঞান ফেরার পর পরদিন হোটেল থেকে অন্য একটি ভবনের ৯ তলায় নিয়ে একটি কক্ষে নিয়ে আবারো নির্যাতন করাসহ তার বাড়িতে টাকা দেয়ার জন্য জামালকে দিয়ে ফোন করানো হয়। এছাড়া লোকনাথের লোকজন বাড়িতে ফোন করে জানায় জামালতে জীবিত ফিরে পেতে হলে তবিবুরের কাছে ৪৫ লাখ বুঝে দেয়া ছাড়াও থানা পুলিশকে না জানানোর হুমকি দেয়া হয়। ভাইকে বাঁচাতে জামালের অন্য ভায়েরা ধার-কর্য্য করে নগদ ৮ লাখ টাকা এবং তবিবরদের চাপে ১১ লাখ টাকার ষ্ট্যাম্পসহ চেক দিতে বাধ্য হয়। এ ব্যাপারে তবিবুরের কাছে জানতে চাইলে বলেন, ব্যবসার জন্য জামালকে টাকা দেয়া হয়েছিল, তাই ফেরত নেয়া হয়েছে। তবিবুরের অন্য ভাই আলিম বলেন, ছোট ভাইরা জমি কিনেছিল কিন্তু কাগজ-পত্র ঠিক না থাকায় এভাবে টাকা ফেরত নেয়া হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তবিবুর রহমান বলেন, স্বর্ণ জামাল নিজেই আত্মসাত করেছে তাই টাকা ফেরত নেয়া হয়েছে। এব্যাপারে জামালের ভাই কামাল বলেন, তার সহজ-সরল ভাইকে অর্থের টোপ দিয়ে স্বর্ণের চালান বহন করানো হতো। তবিবুররা টাকা বুঝে পাবার পর জামালকে ঢাকা থেকে নিয়ে যাবার জন্য বলা হলে গত ২৮ অক্টোবর পরিবারের লোকজন জামালকে ঢাকা থেকে অর্ধমৃত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে এনে মণিরামপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে জামাল গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় বাড়িতে রয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাহেরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।