ঢাকাসোমবার , ২৯ জুলাই ২০১৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মনিরামপুরে ’জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ

Tito
জুলাই ২৯, ২০১৯ ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মনিরামপুরে ’জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১০ শতজের কম জমি আছে এমন দরিদ্র ব্যক্তিদের সরকারি খরচে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও দরিদ্রদের বঞ্চিত করে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের। কদমবাড়িয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফার বসতভিটায় রয়েছে ৯৮ শতক জমি। যার মধ্যে রয়েছে একটি বড় পুকুর ও একটি আধাপাকা বাড়ি। তার তিন ছেলের আয় রোজগার থাকলেও ঘর নির্মাণের জন্য গোলাম মোস্তফার নামে বরাদ্দ করা হয়েছে দু লাখ ৫৮ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। বিষয়টি জানাজানির পর এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যাপক তোলপাড়।
গোলাম মোস্তফার বাড়ি মনিরামপুর উপজেলার সোহরাব মোড়ের পাশে কদমবাড়িয়া গ্রামে। তার বসতভিটায় রয়েছে তার ৯৮ শতক জমি। ওই জমিতে আধাপাকা একটি বাড়ি ও একটি বড় পুকুর রয়েছে। আর চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। যার বর্তমান মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। তার বড় ছেলে আনোয়ার হোসেন স্থানীয় সোহরাব মোড়ে নিজের জমিতে দোকান নির্মাণের জন্য ইট ফেলেছেন। মেঝ ছেলে মঈনুদ্দীনের রয়েছে মোটর গ্যারেজ। ছোট ছেলে জয়নাল আবেদীন ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। অথচ এই গ্রামে নুর ইসলাম, লুৎফর রহমান, আবদুল হকসহ অসংখ্য হতদরিদ্র অসহায় মানুষের বসবাস থাকলেও সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফার নামে ঘর নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে দু লাখ ৫৮ হাজার টাকা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস জানায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মনিরামপুর উপজেলায় হদদরিদ্র ২২ জনের জন্য ২২ টি ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। যার মধ্যে একটি ঘর পাচ্ছেন গোলাম মোস্তফা। ঘর নির্মাণের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। তবে তালিকা প্রস্তুত ও যাচাই বাছাইয়ে যথেষ্ট গরমিলের অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি যাচাই বাছাইপূর্বক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
সরেজমিন কথা হয় সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি বলেন, ‘৯৮ শতক জমির মধ্যে ভাইপোদের ৮ শতক জমি দান করেছি। বাকি ৯০ শতক আমার দখলে রয়েছে। একটা ইটের ঘর করেছিলাম আগে। সেটা এখন ছেলেদের দিয়ে দিয়েছি। এখন আমার কোন ঘর নেই।’ তিনি বলেন, ‘ছয় বছর আগে কাঁঠাল গাছ থেকে পড়ে কোমরে আঘাত পেয়েছিলাম। এখন হুইল চেয়ার ছাড়া চলতে পারিনা।’ অবশ্য ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা অনুদান পান তিনি। এছাড়া তার বয়স্ক ভাতার কার্ডও আছে। গোলাম মোস্তফার ভাইপো বর্তমান ইউপি সদস্য তায়জুল ইসলাম মিলন জানান, তার চাচার বসতবাড়িতে রয়েছে সাড়ে ৯৮ শতক জমি। সেখানে ইটের তৈরি একটি ঘরও আছে। আইন অনুযায়ী তিনি সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য নয়। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মুকুল হোসেন জানান, ‘কদমবাড়িয়া গ্রামে নূর ইসলাম, আব্দুল হক, লুৎফর রহমানসহ অনেকেই আছেন যাদের ৪/৫ শতক করে জমি আছে কিন্তু থাকার কোন ঘর নেই। অথচ মোস্তফা মেম্বারের মত ধনাঢ্য ব্যক্তি যদি ঘর পায় তাহলে প্রকৃত হতদরিদ্ররা পাবেনা কেন?’ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আব্দুল্লাহ বায়েজিদ জানান, ‘যাদের জমি আছে ঘর নেই, ঘর করার সমতা নেই, বিধবা, অসহায় মুক্তিযোদ্ধা এমন ব্যক্তিরা এই ঘর পাবেন। গোলাম মোস্তফা প্রতিবন্ধী। তার কোন ঘর নেই। তাই তাকে ঘর দেওয়া হয়েছে।’

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।