ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৪ ডিসেম্বর ২০২০
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভবদহে দুই বিলের পানি অপসারণ করতে সেচ কার্যক্রম চালাচ্ছে ভূক্তভোগী কৃষকরা

Tito
ডিসেম্বর ২৪, ২০২০ ৯:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রিপন হোসেন সাজু, মণিরামপুর প্রতিনিধি।।
পরিবার নিয়ে টিকে থাকার জন্য সংগ্রামের অংশ হিসেবে এবার সেব পাম্প দিয়ে বিলের পানি অপসারণ করছেন, ভবদহ পাড়ের ভূক্তভোগী কৃষকরা। ইতোমধ্যে তারা বিলকপালিয়া এবং আড়পাতা বিলের পানি অনেকটাই কমিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। বিল কপালিয়া এবং আড়পাতা বিলের স্থানীয় জলাবদ্ধতা নিরাসন সহ এবছর বোরো আবাদ করতে বিলকপালিয়া পানি নিষ্কাশন কমিটি করা হয়। নেহালপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ র”হুল আমিনকে সভাপতি এবং বালিধা গ্রামের আফজাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫ সদস্যের পানি নিষ্কাশন কমিটি করা হয়।
এ কমিটি দীর্ঘদিন বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে ইতোমধ্যে তারা সেচপাম্প (স্যালো মেশিন) দিয়ে বিলের পানি অপসারণের কাজ শুর” করেছেন। কপালিয়া ত্রিভেন্ড নামকস্থানে ২২টি সেচ পাম্প বসিয়ে বিলের পানি অপসারণ করে ভবদহ নদীতে ফেলছেন। সেচ মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ রুহুল আমিন এবং সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন জানান, গত এক সপ্তাহ ২২টি মেশিনে দিন-রাত ২৪ ঘন্টা এভাবে চালানো হচ্ছে। এতে করে আশা করা যাচ্ছে, মাঘ মাসের মধ্যে বিলকপালিয়া এবং আড়পাতা বিলে অন্তত: ৫০ হাজার কৃষক পরিবার এবছর বোরো আবাদ করতে পারবেন।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, স্থানীয সেচ কমিটি তাদের নিজস্ব অর্থায়নে ১২টি এবং বিএডিসি যশোর অফিস থেকে ১০টি সেচ পাম্প (স্যালো মেশিন) বসানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিএডিসি যশোরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল রশিদ, নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহাবুব আলম এবং সহকারী প্রকৌশলী মোঃ সোহেল রানা কপালিয়া ত্রিভেন্ড নামকস্থানে ভূক্তভোগী কৃষকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। যদিও সেখানে ব্যানার দেওয়া হয় সেচকার্য্য আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য।
অবশ্য তাদের ওই ব্যানারে রাখা হয় আয়োজনে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় ভূক্তভোগী কপালিয়া গ্রামের কৃষক সিদ্দিকুর রহমান সরদার, অভয়নগরের কালিশাকুল গ্রামের নারায়ন চন্দ্র সরকার জানান, আমরা জনগণ মিলে আমাদের অর্থে বিলের পানি অপসারণের কার্যক্রম শুরু করেছি। বিএডিসি তাদের সেচ ম্যাশিন ভাড়া খাটাচ্ছে মাত্র।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএডিসি যশোরের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল রশিদ এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম এ প্রতিবেদককে জানান, বিএডিসি নামমাত্র মূল্যে আপাতত এক বছরের জন্য ভাড়া হিসেবে মেশিন গুলো দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিটি মেশিনের বাৎসরিক ভাড়া ধরা হয়েছে ৫হাজার টাকা। এছাড়াও প্রতিটি মেশিনের বিপরীতে জামানত হিসেবে ৭ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। সেচ কমিটি জানিয়েছেন, ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বিএডিসিকে দেওয়ার পর তারা ১০টি মেশিন সরবরাহ করেছেন।
আর নিজেদের অর্থায়নে ১২টি মেশিন চালানো হচ্ছে। সেচ কমিটি সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক জানান, বিলের পানি অপসারণ করলে বিলকপালিয়া এবং আড়পাতা বিলে ২ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকরা বোরো চাষ করতে পারবেন। এজন্য দিন-রাত নিরলস ভাবে পানি অপসারণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সেচ কমিটির উদ্যোক্তা শাহিন হোসেন জানান, অভিশপ্ত ভবদহের কারণে প্রায় তিন দশকের অধিক সময় এ দুটি বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে জমির মালিকরা কোন ফসল করতে পারেন না। ফলে নিরুপায় জনগণ দীর্ঘদিন কষ্টে জীবন যাপন করছেন পরিবার পরিজন নিয়ে।
তাই এবার বোরো আবাদ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতি অপেক্ষা না করে ভিন্নপথ হিসেবে নিজেরা নিজেদের অর্থায়নে বিলের পানি অপসারণ করে বোরো আবাদে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এ উদ্যোক্তা আরো জানায়, এ দু’বিলের মালিকদের কাছ থেকে পানি সেচ বাবদ ১ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
এতে জনগণ স্বতর্স্ফুত ভাবে এগিয়ে এসেছে এ কাজের সহযোগিতা করতে। পানি নিস্কাশন কমিটির সভাপতি মোঃ রুহুল আমিন জানান, গত ১ সপ্তাহ সেচ কার্যক্রম চালানোর পর উভয় বিলের পানি প্রায় এক ফুট কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সেচ কার্যক্রম এভাবে অব্যাহত থাকলে মাঘ মাসের মধ্যে চাষিরা তাদের জমি রোপন করতে পারবেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিলের পানি সেচের ব্যাপারে আমি বেশিকিছু জানি না। বিষয়টি জানতে বিএডিসিকে ফোন করেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।