ঢাকামঙ্গলবার , ২৮ অক্টোবর ২০১৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মণিরামপুরে জমি নামপত্তনে বছরে ৩ কোটি টাকা ঘুষ লেনদেন জমি মালিকদের জিম্মি করে ভূমি অফিসের নায়েবদের ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ

admin
অক্টোবর ২৮, ২০১৪ ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মনিরামপুরের ভূমি অফিসগুলোতে জমির মিউটেশন(নামপত্তন), খাস জমি বন্দোবসত্ম ও খাজনা পরিশোধের সনদসহ জমি সংক্রামত্ম কাজকে কেন্দ্র করে বছরে ৪ কোটি টাকা ঘুষ লেনদেন হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম পত্তনে জমি মালিকদের জিম্মি করে সংশিস্নষ্ট অফিসের দূর্নীতিপরায়ন কর্মকর্তারা সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে পঞ্চাশ থেকে ১’শ গুন বেশী অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ । এ বিশাল অংকের টাকা দিতে হয় সংশিস্নষ্ট ইউনিয়ন নায়েবদের। যার পুরো টাকাটা জমি মালিকদের পকেট থেকেই গুনতে হয়।
তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়, উপজেলায় জমি বন্দোবসেত্মর জন্য ১টি পৌরসভা ও ১৭ ইউনিয়নে ২’শ৪৬টি মৌজা’র জন্য ১৩টি ভূমি অফিস রয়েছে। অফিসের কর্মকর্তার বিরম্নদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি ও ঘুষবানিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, জমি কেনা-বেচাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ভূমি অফিসে নাম পত্তন ,ব্যাংক লোন ও উচ্চ শিÿা নিতে বিদেশে যাওয়ার জন্য জমির খাজনার পরিশোধ সনদ পত্র নেয়ার সময় নানা ভোগামিত্মতে পড়তে হয় সাধারন জমির মালিকদের। এ প্রসঙ্গে পৌর শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ভুক্তোভোগী আক্তারম্নল ইসলাম আক্তার বলেন, ছেলের বিদেশে উচ্চ শিÿার জন্য খাজনা পরিশোধের সনদ দরকার হয় এবং তা আনতে গেলে তার কাছে মোটা অংকের অর্থ চাওয়া হয় । যেখানে নামপত্তনের জন্য সরকার নির্ধারিত ফিস ২’শ ৫০ টাকা ধার্য থাকলেও দালাল ও সংশিস্নষ্ট অফিসের অসাধূ কর্মকর্তার যোগসাজসে অসম্পূর্ন কাগজের অজুহাত দিয়ে নির্ধারিত ফিসের চেয়েও ৫০ থেকে ১’শ গুন বেশী অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। সূত্র মতে, ১৯৬২ সালের মাঠ জরিপের পর ১৯৮৯ সাল শুরম্ন হয়ে ১৯৯৪ সালে শেষ হলেও ২’শ ৪৬টি মৌজার মধ্যে ১’শ ৯টি মৌজার ফাইনাল প্রিন্ট বের হয়েছে। হাল রেকর্ডের আগেই যে সব মৌজার জমি কেনা-বেচা হয়েছে তা দলিল কার্য সম্পন্ন করতে গেলেই যত বিপত্তি। এমতাবস্থায় নাম পত্তনের জন্য জমির মালিক সংশিস্নষ্ট ভূমি অফিসে গেলে অসাধূ কর্মকর্তারা পেয়ে বসে। মিউটেশন করতে জমি মালিকদের উপজেলা ভূমি অফিসে সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর মামলা রম্নজু করতে হয়। কিন্তু উপজেলা ভূমি অফিসে ওই মামলার তদমত্ম রিপোর্ট জমা দেয়ার দায়িত্ব অর্পিত হয় সংশিস্নষ্ট ইউনিয়ন নায়েবদের। এ সুযোগে সংশিস্নষ্ট ইউনিয়ন নায়েবরা জমি মালিকদের নামপত্তন করে দেয়া বাবদ প্রতি কেসে মোটা অংকের ঘুষ দাবি করে। নামপত্তনের স্বার্থে তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে এক প্রকার বাধ্য হয় জমি মালিক। অথচ জমি নামপত্তনে সরকারি খরচ ডিসিআর/ভ্যাট বাবদ ২’শ ৮২ টাকা এবং কোর্ট ফি বাবদ ৫ টাকা , সব মিলিয়ে সরকারি নির্ধারিত ফি ২’শ৮৭ টাকা। কিন্তু সংশিস্নষ্ট ইউনিয়ন নায়েবরা কেস প্রতি ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার এমনকি এর চেয়েও বেশী নিয়ে থাকে বলে অভিযোগ। পৌর ভূমি কর্মকর্তা নিছার উদ্দীন, ঢাকুরিয়ার মোশারফ, শহিদুল ইসলাম, নেহালপুরের গোলাম রসুলসহ অধিকাংশের বিরম্নদ্ধে ব্যাপক অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। সূত্রমতে ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের নাউলী প্রতাপকাটী গ্রামের মুক্তি প্রসাদ সরকার নামে একব্যক্তিকে ‘‘খ’’ তফশীলভূক্ত জমির খাজনা গ্রহন ও নাম পত্তন করে দেয়ার কথা বলে সংশিস্নষ্ট ছোট নায়েব শহিদুল ৬০ হাজার ঘুষ হিসেবে গ্রহন করেন বলে অভিযোগ। ঢাকুরিয়া এলাকার হরিচাদ, বজলু, শওকত নেহালপুরের আলতাফ মোড়ল, মুনসুর আলী, দহর মষিয়াহাটি গ্রামের রিপন ধর, মনোহরপুর এনায়েতপুরের রামচন্দ্র, গোলাম মোসত্মফাসহ এমন অসংখ্যা ভুক্তোভোগীর কাছ থেকে অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ সংশিস্নষ্ট ভূমি কর্মকর্তাদের বিরম্নদ্ধে। এদের কাছ থেকে ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংশিস্নষ্ট নায়েবরা। তবে,এ ব্যাপারে জানতে সংশিস্নষ্ট নায়েবদের অনেকের মুঠোফোনে ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেনি। গত অর্থ বছরে সংশিস্নষ্ট অফিসে জমি নামপত্তনে ৩ হাজার ৯’শ ৭৭টি কেস রম্নজু হয়। এর বিপরীতে সব কেসই ওই বছরে নিষ্পত্তি হয়। চলতি অর্থ বছরে এ পর্যমত্ম ১১’শ মামলা রম্নজু হয়, যার অধিকাংশ নিষ্পত্তি হয়েছে আর কিছু রয়েছে নিষ্পত্তির অপেÿায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী মামলা রম্নজু হয় পৌরসভায় এবং কম হয় হরিহরনগর ইউনিয়নে। এ হিসেবে জমি নামপত্তনে কেস প্রতি গড়ে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নিলেও গত বছরে প্রায় ২ কোটি টাকা ঘুষ লেনদেন হয়েছে। এছাড়া গত ২০১২ সালে ৩৮ টি খাস জমি বন্দোবসেত্মর জন্য সুপারিশ করা হলেও তার ১১ টি বাদে বাকী ২৭ টির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ খাত ছাড়াও জমির খাজনা পরিশোধের সনদ নিতেও গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ৩ কোটি টাকা ঘুষ লেনদেন হয় সংশিস্নষ্ট ভূমি অফিসগুলোতে। জানতে চাইলে উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) কামরম্নজ্জামান বলেন, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন বিধায় মমত্মব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ নজরম্নল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে,অনেকের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।