বৈধ পাসপোর্ট এবং ভিসা ছিল। কিন্তু সন্দেহের বশে যুবককে জেরা করতে যে জবাব পেলেন, তাতে খুশি হননি অভিবাসন দফতরের কর্তারা। অতএব আরও জেরা। সঙ্গের ল্যাপটপ চালু করতে বলা হল। ল্যাপটপে মেলা কিছু তথ্যে সন্দেহ আরও বাড়ল। মহম্মদ বরকতউল্লাহ নামে সন্দেহভাজন এক বাংলাদেশি যুবককে  পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে পাকড়াও করল অভিবাসন দফতর। বছর পঁচিশের ওই যুবকের বাড়ি  ফরিদপুর জেলার শালথা থানার কানাইর গ্রামে। ধৃতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

বনগাঁ আদালতের বিচারক বুধবার ওই যুবককে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের কর্তারা তাকে জেরা দফায় দফায় করেছেন। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও এ দিন বনগাঁয় এসে ওই যুবককে জেরা করেন। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি, জেরায় তাঁরা জেনেছেন, পেট্রাপোল হয়ে বরকতউল্লাহের যাওয়ার কথা ছিল কলকাতায়। সেখান থেকে তাকে দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল অন্য এক জনের। সেখানে কারও সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল বাংলাদেশের ওই যুবকের। জেলা পুলিশের এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একটি দল তাকে নিয়ে দিল্লি রওনা হয়ে গিয়েছেন বুধবার রাতেই। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, বাংলা-হিন্দি-ইংরেজিতে পারদর্শী বরকতউল্লাহের ল্যাপটপে ভারত-বিরোধী কিছু ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার হয়েছে কয়েকটি সিম-কার্ড। কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তার যোগ আছে কি না, গোয়েন্দারা তা খতিয়ে দেখছেন।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় এর আগেও জঙ্গিদের আনাগোনার প্রমাণ মিলেছে। ২০০১-এ খাদিম-কর্তা পার্থ রায়বর্মণকে অপহরণ করে রাখা হয়েছিল হাড়োয়ার পুকুরিয়ার ভূতবাড়িতে। সিআইডি-র দাবি, ওই ঘটনায় মুক্তিপণের একাংশ গিয়েছিল আমেরিকায় ৯/১১-কাণ্ডের অন্যতম চাঁই মহম্মদ আটার হাতে। ১৯৯৪ সালে কান্দাহার বিমান ছিনতাই কাণ্ডেও মূল চক্রী বেলালের আস্তানা ছিল বসিরহাটের শাঁকচুড়ো গ্রামে। সেখান থেকে গ্রেফতারও করা হয় তাকে। ২০০৭-এ পেট্রাপোল থেকেই লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছিল দুই পাক নাগরিক-সহ চার জনকে। যাদের মধ্যে এক জন আত্মঘাতী বাহিনীর সদস্যও ছিল বলে সিআইডি-র দাবি। তাই বরকতউল্লাহের গ্রেফতারির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।