ঢাকারবিবার , ২১ ডিসেম্বর ২০১৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মালয়েশিয়া থেকে ফিরতে হবে না লাখো বাংলাদেশি শ্রমিককে

admin
ডিসেম্বর ২১, ২০১৪ ১:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রবাসী শ্রমিকদের বৈধতার মেয়াদ বাড়ার খবর দিয়েছে মালয়েশিয়ার পত্র-পত্রিকাগুলো। এ খবরে বিভিন্ন দেশের প্রবাসী শ্রমিকদের আনন্দের বন্যা বইছে।
বিশেষ করে লাখো বাংলাদেশি শ্রমিককে ‘অবৈধ’ হিসেবে আর দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে না। অবসান ঘটতে যাচ্ছে তাদের অনিশ্চয়তা, হতাশা, আতঙ্ক আর মানবেতর জীবন যাপনের। এছাড়া ২০০৯ সালের পর থেকে নির্মাণ, সেবা ও কারখানায় শ্রমিক রফতানি বাংলাদেশের জন্য বন্ধ রয়েছে। এ ঘোষণায় এসব খাতে বাংলাদেশের শ্রমের বাজার ফের খোলার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশিসহ বৈধতার মেয়াদ বাড়তে যাওয়া লাখ লাখ শ্রমিকরা তাই এ সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন রাজাককে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত মালয়েশিয়ার প্রভাবশালী জাতীয় দৈনিক দ্য স্টার অনলাইন থেকে জানা গেছে, মাস্টারবিল্ডার অ্যাসোসিয়েশন মালয়েশিয়া (এমবিএএম) নামে নির্মাণ মালিক সমিতির দাবি মেনে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহিদ হামিদির উত্থাপিত এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) অনুমোদন করেছে দেশটির সংসদ। মালয়েশিয়ায় কর্মরত ২০১১ সালে বৈধ করা বিদেশি সব শ্রমিকের জন্য এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে।
পত্রিকাটি জানিয়েছে, বিভিন্ন দেশের কয়েক লাখ প্রবাসী শ্রমিকের বৈধতার মেয়াদ এক বছর বাড়িয়েছে মালয়েশিয়া। এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অস্থায়ী সেক্রেটারি জেনারেল দাতুক আলুই ইব্রাহিম সাঈদ।
জানা গেছে, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এমবিএএমের প্রতিনিধিরা বিদেশি শ্রমিকদের বৈধতার মেয়াদ বাড়ানোর দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করলে তা বিশেষ বিবেচনায় আনা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহিদ হামিদি বিষয়টি বৃহস্পতিবার সংসদে উত্থাপন করলে ৬পি প্রোগ্রামের আওতায় বৈধ হওয়া ৩ লাখ ৫২ হাজার শ্রমিকের বৈধতার মেয়াদ বৃদ্ধি সংসদে অনুমোদন পায়।
ফলে বিভিন্ন দেশের এ বিপুল সংখ্যক নির্মাণ শ্রমিককে আর দেশে ফিরতে হচ্ছে না। নির্মাণ খাতে বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে বৈধতা পেয়েছিলেন ৫ লাখ ২১ হাজারের কিছু বেশি শ্রমিক। এর মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা জানা যায়নি। তবে সব খাত মিলিয়ে বর্তমানে মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৫-৬ লাখ।
এর আগে বৈধতার মেয়াদ বাড়ানো হবে না বলে মালয়েশীয় সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। অনেকে বিশেষ ক্ষমার সুযোগে দেশে ফিরে গেছেন। আবার অনেকে ‘অবৈধ’ হয়ে পালিয়ে কাজ করছেন। বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি হয়ে দেশে ফেরার অপেক্ষায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। দূতাবাসে ভ্রমণপাসের জন্য প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত মানুষ। বিপুল সংখ্যক শ্রমিক অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছিলেন। এদিকে সংসদের সিদ্ধান্তের সুবাদে নির্মাণ শ্রমিকদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক কারখানা শ্রমিকও মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ পাবেন বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে ২০১১ সালে অবৈধ শ্রমিকদের বৈধকরণ প্রক্রিয়ায় ১৩ লাখের বেশি শ্রমিক বিভিন্ন সেক্টরে বৈধতা পেয়েছিলেন, যার মেয়াদ ছিল তিন বছর। সেবা খাত ছাড়া নির্মাণ, কারখানা ও কৃষি খাতসহ বনায়ন খাত ও এ বিশেষ সুবিধার অন্তর্ভূক্ত থাকবে বলে জানা গেছে।
মালয়েশিয়ায় নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান বারকাত ডাইনামিকের মালিক মো. কামারুজ্জামান কামাল বলেন, আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবস উপলক্ষে এটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ফলে আমার কোম্পানির অধীনে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ৮০০ বাংলাদেশি শ্রমিককে আপাতত দেশে ফিরতে হচ্ছে না। এটা আমাদের বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের খবর। অবশেষে দুশ্চিন্তামুক্ত হলেন বাংলাদেশিরা।
ক্যারাম এশিয়ার রিজিওন্যাল কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মাদ হারুন আল রশিদ বলেন, এটা বাংলাদেশিদের জন্য অত্যন্ত ভালো খবর। বাংলাদেশিদের আর দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে না। মালয়েশিয়া সরকার সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে যুগোপযোগী সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। এক্ষেত্রে মালিক কর্তৃপক্ষ যে দাবি নিয়ে সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে সরকার তা বাস্তবায়ন করেছে।
৬পি কর্মসূচির আওতায় বৈধ হওয়া নারায়ণগঞ্জের সাদেকুর রহমান বলেন, ভেবেছিলাম, দেশে চলে যাবো। শুক্রবারের মালয়েশিয়ার সংবাদপত্রগুলোর সংবাদে সম্পূর্ণ চিন্তামুক্ত হলাম। মালয়েশিয়ার সরকার সকল প্রবাসীসহ বাংলাদেশি শ্রমিকদের দিকে ফিরে তাকিয়েছে। তাই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন রাজাককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।